"চেপে রাখা ইতিহাস" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ এ গ্রন্থটি বংশানুক্রমে প্রতিটি মুসলিম পরিবারে থাকা একান্তভাবেই বাঞ্ছনীয়, যাতে বর্তমান এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারে আমাদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের অতীত ষড়যন্ত্রটা কি? তাই আপনি নিজে এ বিষয়ে সচেতন থেকে অপরকেও এ গ্রন্থটি পাঠ করতে উৎসাহিত করুন। মনে রাখবেন জ্ঞান আহরণ এবং বিতরণে এটিও হবে আপনার একটি নৈতিক দায়িত্ব। লেখকের বহু দিবা এবং বিনিদ্র রজনীর পরিশ্রম ও সাধনার সুফল এবং সত্যনিষ্ঠ বিবরণে অমুসলিম ঐতিহাসিক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কবি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের মুসলিম জাতির প্রতি হিংসা-বিদ্বেষবশত পরিবেশিত ভুল তথ্য এবং প্রচারণার প্রতি এ গ্রন্থটি চ্যালেঞ্জ স্বরূপ। আজ ইতিহাসের পাতায় যা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, এবং মাদ্রাসায় ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ান হয় এর অনেকটাই সত্যিকার ইতিহাস নয়। তাই এ গ্রন্থটি যা ইতিহাসের আবরণে সাজান হয়েছে এমন সব বানােয়াট উদ্ভট, বিকৃত চিন্তা ও তথ্যের বিপক্ষে তিল তিল করে সত্য উৎঘাটন। করে এ বইয়ের পাতায় পাতায় তা অবতারণা করে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। সত্যান্বেষী পাঠক এ গ্রন্থ পাঠে এসব রহস্য সম্পর্কে প্রচুর তথ্য পাবেন।
ইতিহাসবিদ আল্লামা গোলাম আহমাদ মোর্তজা: ইনি হলেন সেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মহান ব্যাক্তি গোলাম আহমদ মোর্তাজা যার বই এবং তাকরিরের মাধ্যমে মানুষ হাজারো ইতিহাস জানতে পেরেছে। গোলাম আহমাদ মোর্তজা জন্ম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের'র বর্ধমান জেলার মেমারিতে। তিনি একজন বক্তা,গবেষক ও লেখক। তিনি দুই বাংলার অর্থাৎ ভারত বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন পলাশীর যুদ্ধ,অন্ধকূপ হত্যাকান্ড, মহামতি আকবরের কথা এমনি অনেক নতুন তথ্য তিনি প্রমাণসহ পেশ করেন। যা আসলে আমরা যেভাবে জানি সেভাবে বলা হয়নি। তাঁর পুস্তক পাঠে বিশ্বাস অবিশ্বাসের দোলাচলে পড়ে যায় পাঠক, কিন্তু গোলাম আহমাদ মোর্তজা এমনভাবে তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন। তাতে তাকে মেনে নিতে হয়েছে ভারতের বর্তমান ঐতিহাসিকদের। বিখ্যাত ইতিহাসবিদরা তার তথ্য মেনে নিয়েছেন এবং প্রশংসা করেছেন। ইতিহাসের অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য দেন যা চাপা পরে ছিলো ইতিহাসের পাতায়। তিনি সেগুলোকে সামনে তুলে আনার চেষ্টা করেন। তাকে নিয়ে এ পর্যন্ত ভারতে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় তিনি বক্তব্য দিয়ে থাকেন এবং পশ্চিমবঙ্গে তিনি "বক্তা সম্রাট' নামে পরিচিত। তিনি বিখ্যাত হয়েছেন তাঁর কয়েকটি ইতিহাসের বই ও ইতিহাস ভিত্তিক বিতর্কিত বক্তব্যের মাধ্যমে। ইতিহাসের ইতিহাস, চেপেরাখা ইতিহাস,বাজেয়াপ্ত ইতিহাস,পুস্তক সম্রাটসহ অনন্য ইতিহাসের বইয়ের মাধ্যমে তিনি সর্বপ্রথম আলোচনায় আসেন। ভারতের গতানুগতিক ইতিহাস বিষয়ক পাঠ্যপুস্তকগুলোতে মুসলিমদের নিয়ে লিখিত বিভিন্ন তথ্য তিনি বানোয়াট দাবী করেন। সেই তথ্যগুলোর বিরোধীতা করেন এবং সেগুলো মিথ্যা তথ্য তিনি প্রমাণসহকারে খণ্ডন করার চেষ্টা করেন এই গ্রন্থ গুলোতে। পাশাপাশি বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ,গান্ধীজি, রাজা রামমোহন রায়,হরপ্রসাদ শাস্ত্রী,দেবেন্দ্ররনাথ ঠাকুর সম্বন্ধে সমালোচনা করেন এবং তাদের চাপা পরা ইতিহাস সামনে তুলে এনে প্রমাণসহকারে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেন যার ফলে পশ্চিমবঙ্গের সরকার ১৯৮১ সালে তাঁর একটি গ্রন্থ বাজেয়াপ্ত করেন। এরপর তিনি একেরপর এক ইতিহাসের বই প্রকাশ করতে থাকেন,যার সিংহভাগ বই'ই সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গের সরকার বাতিল করেন। তাঁর উপর সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ আনায় গোলাম আহমাদ মোর্তজা তাঁর "বাজেয়াপ্ত ইতিহাস" গ্রন্থে এর প্রতিবাদ করেন। আল্লাহ তায়ালা হযরতের নেক হায়াত দারাজ করেন এবং মানুষের সামনে বই আকারে হোক অথবা ওয়াজ, বক্তৃতা মাধ্যমে হোক সত্যকে উন্মেচন করার তৌফিক দান করুন।