“ডাহুকেরা ভিজে যায়” বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ এর লেখা : মেয়েটি হয়তাে রােজ লুকিয়ে পলকহীন চোখে তাকিয়ে থাকে। কিছুক্ষণ আয়নার দিকে। মেঘবতীর মায়াবী চোখ চিকচিক করে লােনা জলের উথালপাথাল খেলায়! খাঁ-খা রােদে পুড়তে থাকা এক জোড়া কান আজও সেই অমােঘ বাণী শুনছে, মেয়ে তােমার গায়ের রঙ ময়লা।। অথবা সেই গতানুগতিক বেকার যুবকের ধ্রুপদী দীর্ঘশ্বাস! পরিণতি কী হতে পারে জানা নেই, তবু যক্ষের ধনের মতাে বুক জাপটে ধরা একেকটি প্রেমের মহাকাব্য! অথবা নাগরিক জীবন থেকে বহু দূরের কেউ। ছােট্ট ঘরে নৈসর্গিক হয়ে ওঠা প্রিয়তমা স্ত্রী। খেটে খাওয়া পেটানাে শরীর।। হঠাৎ স্বর্গদূতের কড়া আদেশ, তােমাকে উৎখাত করা হলাে এখান থেকে! এমন আরও কতশত চিত্রনাট্য রচিত হচ্ছে লক্ষ্যে-অলক্ষ্যে পৃথিবীর নাট্যমঞ্চে। আচ্ছা, মধ্যবিত্তের যন্ত্রণাগুলাে কেমন হয়? কেমন হয় তাদের যাপিত জীবন? কেমন তাদের সামান্য প্রাপ্তির আনন্দ-চিকার বা। অপ্রাপ্তির দলা পাকানাে কান্নাভেজা দীর্ঘশ্বাস? ঘরের দেয়ালের। পুরনাে পলেস্তারার প্রলেপ খসে পড়ে ঝুরঝুর করে। কোনাে এক শুভদিনে ঝুরঝুর আড়াল করার প্রাণান্ত চেষ্টা চলে মিস্ত্রির সস্তা। চুনের টানের মধ্যদিয়ে। আজ অবধি কত অযুত শিল্পী নিযুত ক্যানভাসে একেছেন এই। টানাপড়েনের জীবন! তবু সেই অসীমের বৈচিত্র্যময় সমাপ্তি। টানতে পারেননি, যে ক্যানভাসের শিরােনাম মধ্যবিত্ত। আহা। মধ্যবিত্ত! মধ্যবিত্তের সেই মহাবােধকে নতুন আঙ্গিকে পরম মমতায় স্পর্শ করার আকুলতায় লেখকের আজন্ম লালিত অক্ষর ক্যানভাসের নাম ‘ডাহুকেরা ভিজে যায়। একটি মধ্যবিত্ত গল্প-গ্রন্থনা।