ফ্ল্যাপে লিখা কিছু কথা গাজ কি বিচ্ছিন্ন কিছু? উত্তরটি এভাবেও হতে পারে: তেলের (কিংবা হালের পরিভাষা, “ভূ-রাজনৈতিক”) আগে থেকেই বাইবেল ছিল। এমনকী ক্রুসেডের আগে থেকে। বিন লাদেন –মোল্লা উমরের আগেই জন্ম নিয়েছিলেন ইহুদী নারীরা। টুইন টাওয়ার ধ্বসের পর অন্তত বত্রিশশ, বছর আগে ধ্বংসযজ্ঞ দেখেছে জেরিকো। আর ‘স্বাধীনতাকামী’ মাকাবিরাও হালের ‘ইসলামি জঙ্গিবাদী’দের হাজার দুই বছর আগেকার। মধ্যপাচ্য ইতিহাসে প্রথম ‘আত্নঘাতী’ এক ইহুদী ঈশ্বরযোদ্ধা-শামাউন।লুকানো ছুরা নিয়ে যারা রোমান আর রোমান সমর্থকদের খুঁজে খুঁজে বেড়াতো এদের কেউই হামাস-হিজবুল্লাহ ছিল না; এমনকি জিলট শিমোনতিরও ‘ইসলামি চরমপন্থী’দের দুই হাজার বছর আগেকার এক বিপ্লবী। মুসা থেকে শামুয়ের-যুদ্ধাপরাধ আর দখলদারিরই উপাখ্যান। আধুনিক ইসরাইল রাষ্ট্র বা গাজা হত্যাযজ্ঞ- এসবের ধারবাহিকতা মাত্র। আর খ্রিস্টানত্ব? ‘শান্তির রাজকুমার’ যখন পশ্চিম থেকে নিজভূমে ফিরতে গেলেন , তখন ধর্মযোদ্ধার কাঁধে সওয়ার হয়ে আসা পুরোদস্তুর এক যুদ্ধদেবতা । তার বিরুদ্ধাবাদীরা হয় ‘স্যাটানিক’ নইতো ‘ইভিল’। অন্য ভাষায় ‘সন্ত্রাসবাদী’ । এছাড়া ‘দজ্জাল’ ,হরমাগিদোনের আগেই যার নিকেশ ঘটানো হবে। হ্যাঁ ,এরই নাম খ্রিস্টান ইহদিবাদ বা খ্রিস্টান সাম্রাজ্যেবাদ বা ইসলাম-পশ্চিম সংঘাত,যার উৎস মূলে বাইবেল;হামাস,আলকায়েদা-তালেবান স্রেফ অজুহাত। একমাত্র বাইবেল বিস্মৃতিই পারে এই রক্ত আর খুনের উল্লাস থামাতে। পশ্চিম কি সেটা পারবে? ভূমিকা এই গ্রন্থটি মূল আলোচ্য খ্রিস্টান ইহুদীবাদ। কিন্তু প্রশ্ন যদি ওঠে যে, সেটি আবার কী? তার উত্তরে্ এখানে সংক্ষিপ্ত বলে রাখি, গাজা গণহত্যা সমর্থন বা ভূমিপুত্র ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ ঘটিয়ে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পেছনে খ্রিস্টান পশ্চিমের ধর্ম-রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার নামই হচ্ছে খ্রিস্টান ইহুদিবাদ। বিষয়টি এরকম; খ্রিস্টীয় বিশ্বাস মতে ,যিশুর দ্বিতীয় আগমন ঘটবে এবং সেটি হবে নিজ অসমাপ্ত মিশন সমাপ্ত তথা পৃথিবী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে। প্রথম আগমন কালেই তিনি তা করতে চেয়েছিলেন।কিন্তু ইহুদিদের কারণে পারেননি। উল্টো ক্রোশ বিদ্ধ হতে হয়েছে। তবে এবার আর ব্যর্থ হবেন না-চুড়ান্ত ইহুদি হত্যাযজ্ঞ (ফাইনাল সলুশ্যন) ঘটবে তাকে দিয়েই; বধ্যভূমিটির নাম হবে হরমাগিদোন বা ইসরাইল। সেই লক্ষ্যেই ফিলিস্তিনে ইহুদি সমাবশে ঘটানো হচ্ছে। ইসরাইল নামের রাষ্ট্রটিকে প্রতিরক্ষা ও সমৃদ্ধি দেয়া হচ্ছে।ওই কাজটি হিটলার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি যিশু ছিলেন না বলে তাকে তা করতে দেয়া হয়নি। সাদ্দামকে নিয়েও ছিল একই ভীতি।তিবে বর্তমান বিষয়বস্তু খ্রিস্টন ইহুদিবাদ হলেও পাশাপাশি উপস্থিত হয়েছে ইসলামের ইতিহাস; প্রসঙ্গক্রমেই এসেছে ইউরোপ,ক্রুসেডসহ খ্রিস্টানত্বের তাত্ত্বিক ক্রমবিকাশের দিক গুলো। এমনকি রোম-বাইজান্টাইন এবং বাইবেল কুরআনে উল্লিখিত যিশু জীবনী ও প্রকৃতি। পুরান ও্ ইতিহাসের ভেতর দিয়ে দেখতে চাওয়া হয়েছে যিশু ও তাঁর নামে প্রচারিত ধর্মকে। বলাবাহুল্য ইসলামকেও প্রভাবিত করে। দুই, সাধারণভাবে ক্রুসেড বলতে বুঝায় ,‘কাফের’ (Infidel) মুসলমানদের কাছ থেকে খ্রিস্টান ‘পবিত্রভূমি’ পুনরুদ্ধার লক্ষ্য –সংবলিত পশ্চিম ইউরোপীয় সমরাভিযান। কিন্তু ‘ক্রুসেড কেন’ এরকম প্রশ্নের বিস্তৃত কোনও জবাব অন্বেষণে যায়নি, এখানে সেই প্রয়োজন পড়ে না্। যদিও নানা মনির নানা মত –যেমন, ক্রুসেডের হাঁক ছেড়ে ক্যাথলিক চার্চ চেয়েছিলেন প্রাচ্য কর্তৃত্ব তথা ইস্টার্ন অর্থোডক্সিকে একহাত দেখিয়ে দিয়ে। এ কারণে চতুর্থ ক্রুসেডে আক্রান্ত হয়েছে পূর্বীয় খ্রিস্টানত্বের কেন্দ্রভূমি-কনস্টান্টিনোপল। বলা হয় যে, নব উদ্ভুত নাইটদের কাছ থেকে চার্চ মন্টেসরি বাঁচাতে গিয়েও প্রয়োজন পড়েছিল ক্রুসেড-ধাঁচের কিছু তথা ইউরোপ-বহির্ভূত মগের মুল্লুকের যোগানকারী। আছে বানিজ্য-বেসাতি তত্ত্বও।পরই সেটি চলে গেল খ্রিস্টান করায়ত্বে।ভেনেসীয় সওদাগর দলও লাভের কড়ি গুনতে চেয়েছিল, ক্রুসেডারদের জন্য জাহাজ যোগান দিয়ে তাই করেছে।জেনোয়ার সওদাগর দল মুনাফা করেছে শিশু ক্রুসেডার বানিয়ে। এছাড়া আত্ন:সংঘাতে জর্জরিত ইউরোপ দেখাছিল রাজনৈতিক ঐক্য এর স্বপ্ন: নিজেদের মধ্যকার খুনোখুনিকে অন্য কোথাও স্থানান্তর ,ক্রুসেড তাও সম্ভব করেছিল। সূচিপত্র *প্রথম অধ্যায়: সংঘাত ও তত্ত্ব *দ্বিতীয় অধ্যায়: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও ইসলাম *তৃতীয় অধ্যায়: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-খ্রিস্টান ইউরোপ *চতুর্থ অধ্যায়: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-খ্রিস্টান মহাসভাসমুহ *পঞ্চম অধ্যায়:যিশু,রোম, খ্রিস্টধর্ম *ষষ্ঠ অধ্যায়: সংক্ষিপ্ত ইতিহাস-ক্রুসেড *সপ্তম অধ্যায়: খ্রিস্টান ইহুদিবাদ *অষ্টম অধ্যায়: খ্রিস্টান ইহুদিবাদী ইতিহাস *নবম অধ্যায়: বাইবেল ও যিশু *দশম অধ্যায়: মরিয়ম,ঈশা, কুরআন পরিশিষ্ট *প্রথম অধ্যায়: সংঘাত ও তত্ত্ব *দ্বিতীয় অধ্যায়: ইসলাম *তৃতীয় অধ্যায়: খ্রিস্টান ইউরোপ *চতুর্থ অধ্যায় : খ্রিস্টান মহাসভাসমুহ *পঞ্চম অধ্যায়: যিশু,রোম, খ্রিস্টধর্ম *ষষ্ঠ অধ্যায়: ক্রুসেড *সপ্তম অধ্যায়: খ্রিস্টান ইহুদিবাদ *অষ্টম অধ্যায়: খ্রিস্টান ইহুদিবাদী ইতিহাস *নবম অধ্যায়: বাইবেল ও যিশু বিশেষ পরিশিষ্ট বিশেষ সংযোজন অন্যান্য