পদ্মাবতীর রূপ বর্ণনায় আলাওল যথেষ্ট কৃতিত্ব প্রদর্শন করেছেন। বস্তু বিভাগে মূল্যের ওপর নির্ভরশীলতা এবং মূলানুগ তথ্য বজায় রেখেও আবেগে, অনুভ‚তিতে, তীক্ষè দৃষ্টিচেতনায় এবং সৌন্দর্য উপভোগে আর কবিত্বের প্রকাশে তার স্বাতন্ত্র্য ও মৌলিকতার পরিচয় কাব্যদেহে উজ্জ্বলরূপে বিধৃত হয়েছে। পদ্মাবতীর বয়ঃসন্ধির বর্ণনায় কবি বৈষ্ণব কবিদের মতো রূপচেতনা ও সৌন্দর্য সম্ভোগের দক্ষতা দেখিয়েছেন। মূল গ্রন্থে বর্ণিত অংশের চাইতে তার অংশ অনেক উজ্জ্বল, জীবন্ত ও রক্তমাংসময় হয়েছে। উপনীত হৈল আসি যৌবনের কাল কিঞ্চিৎ ভ‚রুর ভঙ্গে বচনে রসাল।। আড় আখি বঙ্ক দৃষ্টি ক্রমে ক্রমে হএ। ক্ষেনে ক্ষেনে লাজে আসি তনু সঞ্চারএ।। ।। পদ্মাবতী জন্মবর্ণন খণ্ড ।। ‘এখানে মূলের চেয়ে আলাওলের ভাষা অধিকতর উজ্জ্বল এবং মধ্যযুগীয় রীতি প্রকরণ অতিক্রান্ত। পদ্মাবতীর সলজ্জ গমনভঙ্গি, সচকিত দৃষ্টিপাত এবং যৌবন সচেতনতার সজাগ কৌত‚হলের মধ্যে আমরা একজন সজীব নবযৌবনা রমণীকে প্রত্যক্ষ করি।’ রতœসেনের নিকট পদ্মাবতীর রূপের বর্ণনা করতে গিয়ে কবি শুকের মাধ্যমে বলছেনÑপদ্মাবতীর রূপের তুলনা ত্রিভুবনে নেই। কাস্তুরী-সুগন্ধময় আপাদ লম্বিত তার কেশÑ‘কালো অন্ধকারময়’Ñযা দৃষ্টিকে সাংঘাতিকভাবে হার মানায়।