"জয়বাংলা বলতে মনরে আমার" ফ্ল্যাপে লেখা কথা: অগ্নিঝরা-রক্তঝরা-অশ্রুঝরা-রােদনভরা একাত্তর! ধানের শীষের উপর জঙ্গি বিমান উড়লাে। শিশির ভেজা ঘাসফুল মাড়িয়ে জলপাই রংয়ের ট্যাঙ্ক গর্জে এলাে পদ্মদিঘির পারে। আমলকীর ডালে বসা মাছরাঙা পাখিটা অজানা সুরে আর্তনাদ করে উড়ে গেল। ডালিম শাখায় দোয়েল পাখির শিস থেমে গেল। গানবােটগুলাে মেঘনা-তিতাসের কাজলকালাে জলরাশি ঘােলা করে পানকৌড়ি ও গাংচিলগুলােকে তাড়িয়ে দিল। আগুনরঙা পলাশ ফোটা চৈতালি বসন্তে সারা বাংলায় স্বাধীনতার ডাক। 'এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’- কিন্তু না, যৌবনে নয় কৈশােরেই ফারুক ওয়াহিদ স্বাধীনতার যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে জীবন বাজি রেখে মহান মুক্তিযুদ্ধে যােগ দেন এবং কলম ছুঁড়ে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে তুলে নেন। প্রথমে আগরতলায় ও পরে ভারতের আসাম রাজ্যের শিলচর-এর দুর্গম পাহাড় ও গহিন অরণ্য বেষ্টিত লােহারবন ট্রেনিং ক্যাম্পে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে মাত্র ২৮ দিনের গেরিলা যুদ্ধের সশস্ত্র ট্রেনিং নিয়ে ২ নং সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মােশাররফ এবং মেজর হায়দার-এর অধীনে হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ ও সন্মুখ রণাঙ্গনে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করেন এবং যুদ্ধে আহতও হন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তাঁকে যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মানি প্রদান করে সম্মানিত করেছেন। ফারুক ওয়াহিদ বর্তমানে স্ত্রী শাহিনা করিম রিনি, পুত্র নাবিল ওয়াহিদ ফয়সল ও কন্যা আফ্রিদা ওয়াহিদ শুচি-সহ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।