পশ্চিমবঙ্গের রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা সাহিত্যে অনার্স কোর্সে ভর্তির পর প্রায় এক মাস ক্লাস করা হয় নি সুমনের। ভর্তির পর পরই দেশে এসে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কাগজপত্র সংগ্রহ করতে অনেক সময় লেগে যায় তার। এক মাস পর যখন আবার কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, তখন অনেক চিন্তিত ছিল সে। সারাদিন ভ্রমণের পর ক্লান্ত সুমন যখন শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে এসে দাঁড়ালো, তখন তার মস্তিষ্ক শ্লথ হয়ে আসছিল। শীতের রাতের ঘন কুয়াশা চলন্ত পথিকের গতিকে যেমন থামিয়ে দেয়, সুমনের সেই দশা হলো। বোঝা বহনকারী কুলির কনুইয়ের ধাক্কায় চৈতন্য ফিরে পেল সে। ঘড়িতে তখন রাত ৯টা প্রায়। সব চিন্তা দূর করে ভাবলো, প্রথমে একটা হোটেলে উঠতে হবে। তারপর ভাবা যাবে। শিয়ালদহ স্টেশনের অদুরে একটি হোটেলে থাকার ব্যবস্থা হলো। পোশাক বদলিয়ে যখন বিশ্রামের জন্য বিছানায় এলিয়ে পড়ল, তখন পিঁপড়ার লাইনের মতো সারিবদ্ধভাবে হাজারও চিন্তা তার অলসতাকে গ্রাস করে ফেলল। নতুন দেশ, নতুন শহর, সবই নতুন। থাকার জন্য মেসের সন্ধান করাটাই তার কাছে কঠিন হবে বলে মনে হয়েছিল। দুশ্চিন্তার শত সহস্র পোকা একত্রিত হয়ে সুমনের কচি মগজটাকে যেন কুঁরে কুঁরে খাচ্ছিল।