‘মুখবন্ধ’ بسم الله الرحمن الرحيم সংবিধান, আইন ও নেতৃত্ব-এ তিনটি ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে একটি রাষ্ট্রযন্ত্র কার্যকর ভূমিকা পালন করে। সংবিধান রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য ও রাজনীতির গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করে, আইন রাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক কৃষ্টি-কালচার এবং লক্ষ্যউদ্দেশ্য অর্জনের পথ রচনা করে, আর নেতৃবর্গ রাষ্ট্রের সার্বিক কর্মযজ্ঞ তথা উন্নয়ন অগ্রগতিতে চালকের ভূমিকা পালন করে রাষ্ট্রের সার্বিক শক্তি সামর্থকে লক্ষ্য উদ্দেশ্য অর্জনে সম্পৃক্ত করে। রাষ্ট্রের এ তিনটি মৌলিক বিষয়ে ইসলাম যে মূলনীতি দিয়েছে তা সবচেয়ে উন্নত, টেকসই এবং মানবতার কল্যাণের নিশ্চয়তা দেয়। আইন সম্পর্কে যে কোন মুসলিমের দৃষ্টিভঙ্গি অন্যান্য ধর্মাবলম্বী মানুষের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। কারণ ইসলাম মানুষের গোটা জীবনটাকেই এক ও অভিন্ন তাওহীদের ছাঁচে গড়ে তুলতে চায়। আল্লাহ তাআলা এবং তাঁর রাসূল স. মানবজীবনের জন্য যে বাস্তবভিত্তিক জীবনপদ্ধতি প্রবর্তন করেছেন, এটাকেই বলা হয় ইসলামী আইন। ইসলামী আইন জীবনের সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে। মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক, দেওয়ানী, ফৌজদারী, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সকল আইনের ক্ষেত্রেই ইসলামের রয়েছে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি এবং নীতি আদর্শ। ইসলামী আইন সর্বজনীন ও সামগ্রিক। ইসলামী আইন জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত মানবজীবনের সবকিছু পরিচালিত করে। প্রত্যেক মুসলমান তার সমগ্র জীবন ইসলামী আইনের আলোকে পরিচালিত করবে, এটাই ঈমানের দাবি। মুসলমানদের জন্য ইসলামী আইন শুধু শাস্ত্রীয় মতাদর্শিক বিষয় নয়, মুসলিম সমাজে ইসলামী আইন একটি প্রাণবন্ত চেতনা। ইসলামী আইন তাদের প্রাত্যহিক জীবনাচারে প্রতিফলিত হয়ে জীবন্ত হয়ে ওঠে এবং বিগত প্রায় পনেরো শতাব্দি ধরে মুসলিমদের জীবন গঠন করে আসছে এবং এখনও করছে। ইসলাম একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা এবং অবিভাজ্য আদর্শ। ইসলামে জাগতিক, রাজনৈতিক ও মাযহাবী মতপার্থক্য থাকলেও পারলৌকিক বিশ্বাস সম্পর্কে কোন মতপার্থক্য নেই। কেয়ামত পর্যন্ত ইসলাম প্রথম দিনের মতোই সতত সজীব ও কার্যকর, যদি রাষ্ট্রযন্ত্র ইসলামী আদর্শকে পরিপালন করে এবং ইসলামী আইনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি ইসলামী আদর্শের লালন ও সুরক্ষা নিশ্চিত না করে, তাহলে ইসলামী আইন তার সর্বজনীন কল্যাণের প্রতিফলন ঘটাতে পারে না। এ কথাই মুহাম্মদ রাসূলুল্লাহ স. এর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে…..।