স্বপ্ন! ছোট্ট একটি শব্দ, অথচ বরাবরই এক বিস্ময় জাগানিয়া নাম। ইসলামি শিক্ষায় দীক্ষিত মানুষ থেকে শুরু করে বৈজ্ঞানিক ব্যক্তিবর্গ, এমনকি সেক্যুলার সমাজেও স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যাকে ঘিরে প্রতিনিয়ত উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। আমরা স্বপ্ন দেখি। জাগ্রত অবস্থায় যেমন স্বপ্ন দেখি, তেমনি ঘুমন্ত অবস্থাও দেখি। জাগ্রত অবস্থার স্বপ্ন হচ্ছে আমাদের চিন্তাভাবনা, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ইত্যাদি। জাগ্রত অবস্থায় স্বপ্নকে রুপক অর্থে ব্যবহার করা হয়। অপরদিকে ঘুমন্ত অবস্থায় আমরা যা দেখি, তা-ই প্রকৃত স্বপ্ন। সেই স্বপ্নকে ঘিরেই সবার যত কৌতূহল, আগ্রহ-উদ্দীপনা। আমরা ভালো স্বপ্ন দেখলে খুশি হই, বলি ‘অনেক সুন্দর স্বপ্ন দেখেছি’। আবার, খারাপ স্বপ্ন দেখলে বলি, ‘আজকে ভয়ানক একটা স্বপ্ন দেখলাম’। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে স্বপ্ন কী? ইমাম ইবনু সিরিন রহ. বলেন, “স্বপ্ন তিন প্রকার। মনের কল্পনা ও অভিজ্ঞতা, শয়তানের পক্ষ হতে ভয় প্রদর্শন ও কুমন্ত্রণা এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ হতে সুসংবাদ বা সত্য স্বপ্ন।” সৃষ্টির শুরু হতে আজ অবধি স্বপ্ন নিয়ে গবেষণা, বই-পুস্তক কম রচনা হয়নি। তবু আজও মানুষ স্বপ্ন কী, তার মর্মার্থ, স্বপ্ন ব্যাখ্যার সঠিক পদ্ধতি, স্বপ্ন দেখলে কী কী করণীয় প্রভৃতি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফিরছে। বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি, আল্লাহ তাআলার একমাত্র মনোনীত দীন ইসলাম সেসব প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। বক্ষ্যমাণ গ্রন্থটি মূলত কুরআন ও হাদিসের আলোকে স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যা সম্পর্কিত দালিলিক আলোচনা। বাজারে প্রচলিত বৃহৎ কলেবরের স্বপ্নের ব্যাখ্যা সম্বলিত বইগুলো সাধারণত অবহেলিতই রয়ে যায়। তাছাড়া প্রচলিত যেসব খাবনামা রয়েছে, তার অধিকাংশই নির্ভরযোগ্য নয়। তাই বইয়ের কলেবর, নির্ভরযোগ্যতা ও বাস্তব জীবনে এ নববি ইলমের প্রায়োগিক ক্ষেত্রসমূহ বিবেচনা করলে বক্ষ্যমাণ বইটি ইসলামি সাহিত্য অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হতে যাচ্ছে ইনশা আল্লাহ।