‘ভৌতিক উপন্যাসঃ মৃত্যুপ্রাসাদ’ বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ আশিক অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে নিশিনির দিকে। নিশিনি সুন্দর, অপূর্ব সুন্দর। লাল শাড়ীতে যেন তাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। অথচ এই সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে চরম পৈশাচিকতা। কে বলবে নিশিনির মতো সুন্দরী নারী মানুষের রক্তপানে অভ্যস্ত। আজ নিশিনি জোর করে তার রক্ত পান করবে। কিন্তু আশিক চাচ্ছে না নিশিনি তার রক্তপান করুক। তাই মৃত্যুপ্রাসাদ থেকে পালানোর সিদ্ধান্ত নিল সে। কিন্তু পারল না। নিশিনি আর তার দুই নারী সঙ্গীর হাতে বন্দি হলো সে। এখন সে অসহায়! বড় অসহায়! শত বছরের পুরাতন মৃত্যুপ্রাসাদে হয়তো কেউ আসবে না তাকে উদ্ধার করতে। সেক্ষেত্রে তার একমাত্র পরিণতি মৃত্যু। কিন্তু মারা যেতে চায় না সে। বাঁচতে চায়। বাঁচতে চায় তার স্ত্রী মুনমুনের জন্য, যাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। সেই মুনমুন তাকে উদ্ধার করতে প্রবেশ করেছে মৃত্যুপ্রাসাদে। নিশিনির ফাঁদে পা দিয়েছে সে। তার নিজেকে বাঁচাতে হলে রক্তপান করতে হবে নিজ স্ত্রী মুনমুনের। এরকমই ভয়ংকর শর্ত দিয়েছে নিশিনি, যা পালন করা আশিকের পক্ষে অসম্ভব। শেষ পর্যন্ত কী বাঁচতে পেরেছিল আশিক আর মুনমুুন? আর কী ঘটেছিল রক্তপিপাসু নিশিনির ভাগ্যে?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।