মারণাস্ত্র এবং মানবকল্যাণ পরস্পরবিরোধী বিষয়। মানববিধ্বংসী ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেল মানবতার কল্যাণে রেখে গেছেন তাঁর অর্জিত প্রায় সমুদয় ধনসম্পদ। এই অর্থে এক শ' বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বজুড়ে মেধাবী এবং সৃজনশীলদের স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে। নাম থেকেই বোঝা যায় বইটি স্রেফ ভ্রমণ কাহিনী নয়। নিছক ঘোরাফেরা আর দেখাশোনার মামুলি বৃত্তান্ত এতে নেই। ভ্রমণ ছাড়াও বইটিতে কিছু গবেষণা, আলফ্রেড নোবেলের জীবন বৃত্তান্ত, এ পর্যন্ত নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত ৭৬৮ জনের তালিকাসহ বেশ কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। পৃথিবীর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কারের প্রবক্তা আলফ্রেড নোবেল সম্পর্কে বাংলা ভাষায় বিস্তারিত লেখালেখি তেমন একটা হয়নি। তবে পুরস্কারটি ঘিরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত বাংলাদেশেও রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতূহল। ২০০৪ সালে সুইডেনে অবস্থানকালে লেখক নোবেল পুরস্কারের সূত্র ধরে ভ্রমণ করেন নরওয়ে, যেখান থেকে প্রদান করা হয় নোবেল শান্তি পুরস্কার। পরে ২০০৬ সালে দ্বিতীয় দফায় নরওয়ে যান বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পুরস্কার গ্রহণ অনুষ্ঠান কভার করার জন্য। সুইডেন ও নরওয়ে ছাড়াও লেখক ঘুরেছেন ডেনমার্ক ও ফিনল্যান্ড। সব মিলিয়ে লেখকের সন্ধানী দৃষ্টি ও সাবলীল বর্ণনায় হয়ে উঠেছে ভিন্ন স্বাদের সুখপাঠ্য বই, যা শিক্ষার্থীসহ সকল পাঠকের কাছে সমাদৃত হবে। শরিফুজ্জামান পিন্টু গত ১৪ বছর ধরে শিক্ষা ও শিক্ষার্থী বিষয়ে সাংবাদিকতা করছেন। বইটিতে শিক্ষণীয় বিষয়ই প্রাধান্য পেয়েছে।
শরিফুজ্জামান পিন্টুর জন্ম ১৯৭২ সালে ৮ অক্টোবর। শৈশব কেটেছে বাগেরহাটের ফকিরহাট থানার সাতশৈয়া গ্রামে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন বিভাগে স্নাতক সম্মান এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। সুইডেনের স্টকহােম ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম এ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশন ডিপার্টমেন্ট থেকে ২০০৪ সালে ওয়েব জার্নালিজম এবং ২০০৩ সালে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যাস কমিউনিকেশন থেকে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিজম বিষয়ে ডিপ্লোমা ডিগ্রী নেন। তিনি পরিবেশ বিষয়ে নয়াদিল্লীর সেন্টার ফর সায়েন্স এ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট আয়ােজিত কর্মশালা, যক্ষ্মা বিষয়ে নেপালের কাঠমান্ডুতে প্যানােস মিডিয়া ফেলােশিপ, সিঙ্গাপুরে স্বাস্থ্য বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনসহ বিভিন্ন সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপাের্টার হিসেবে শরিফুজ্জামান। পিন্টু দৈনিক জনকণ্ঠে যােগ দেন পত্রিকার জন্মলগ্ন ১৯৯৩ সালে ২৬ মার্চ। জনকণ্ঠে এক যুগেরও বেশি সময় কাজ করেছেন। বর্তমানে প্রথম আলাের সিনিয়র রিপাের্টার। এ পর্যন্ত পিন্টু দু'বার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টরন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পুরস্কার এবং তিনবার ঢাকা রিপাের্টার্স ইউনিটি পুরস্কারসহ এক ডজনেরও বেশি পুরস্কার অর্জন করেছেন। এগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিজমআইএফজে টলারেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০০৬, শিক্ষা বিষয়ে রাষ্ট্রপতির সৌজন্যে ঢাকা রিপাের্টার্স ইউনিটি পুরস্কার ২০০৩ ও ২০০৫, এফপিএবি পুরস্কার ২০০১, চারণ সাংবাদিক মােনাজাতউদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার ২০০২, এবং কনকর্ড পুরস্কার ২০০৩। পিতা শেখ মনিরুজ্জামান এবং মা শরীফা বেগম। ২০০১ সালের ২২ জুন সৈয়দা শামীম আরা আহসান বুলা’র সঙ্গে লেখকের দাম্পত্য জীবন শুরু। তাদের একমাত্র সন্তান সাকিফ বায়েজিদ দিব্য’র বয়স তিন বছর।