আজ থেকে অর্ধশতাব্দী আগে কালজয়ী কথাশিল্পী নসীম হিজাযী একটি ব্যতিক্রমী উপন্যাস লিখেন। বইয়ের নাম দেন ‘সফেদ জাযিরা’। শাদা উপদ্বীপ নামের এক দ্বীপদেশে কিং সায়মন নামের এক স্বৈরাচারী শাসক জনগণের জন্য কি অবর্ণনীয় দুঃখ ও দুর্দশা ডেকে এনেছিলেন তারই এক ভয়াবহ চিত্র এঁকেছেন তিনি এ বইয়ে। অর্ধশতাব্দী আগে সে চিত্র ছিল কল্পনার বিষয় কিন্তু কয়েক দশক না পেরােতেই পৃথিবীর মানুষ অবাক বিস্ময়ে সেই ছবি দেখতে শুরু করলাে নিজের চোখে। অদ্ভুত সব চরিত্র, নাটকীয় ঘটনা প্রবাহ আর স্বৈরাচারী শাসকের বিচিত্র খামখেয়লীপনা ও হাস্যকর কাজকর্মের নিখুঁত ছবি যেমন আছে এ বইয়ে তেমনি আছে সম্রাজ্ঞী রােজ ও শাহজাদী লিকাসকার সরকার উৎখাতের গােপন তৎপরতা, ধর্মগুরু ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা, রহস্যময় রকেট প্রসঙ্গ, অভূতপূর্ব গণবিস্ফোরণ, মাদাম লুইজার অভিলাষ, চেরাগ সিংয়ের নেতৃত্বে স্বৈরাচারী শাসকের কবল থেকে মুক্তির বিচিত্র সব কাহিনী। পুরাে ঘটনা দেখেন সে দেশে অবস্থানরত একমাত্র বিদেশী সাংবাদিক শানকু মানকু। তার গভীর পর্যবেক্ষণ ও নিরপেক্ষ প্রতিবেদন থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। জনগণের অসচেতনার কারণে কেমন করে তাদের মাথার ওপর চেপে বসলাে স্বৈরাচার, আবার কেমন করে জনতার ঐক্যের উত্তাল জোয়ারে সে স্বৈরাচার ভেসে গেল সময়ের স্রোতে সেইসব চমকপ্রদ ও মজাদার কাহিনী নিয়েই বেরােল নসীম হিজাযীর আরাে একটি জমজমাট উপন্যাস ‘কিং সায়মনের রাজত্ব’।
Nosim Hijajee শরীফ হুসাইন (ছদ্মনাম নসিম হিজাজী হিসাবে বেশি পরিচিতি, জন্ম:১৯১৪ - মৃত্যু: ২ মার্চ ১৯৯৬) হলেন একজন পাকিস্তানি উপন্যাসিক ও লেখক, যিনি লেখালেখির সময় নসিম হিজাজি ছদ্মনাম ব্যবহার করেন। বাল্য ও কৈশোর কাল গ্রামে কাটলেও তার সোনালী যৌবনটুকু দখল করে আছে ঐতিহাসিক লাহোর শহর। এখানেই তিনি লেখাপড়া করেন এবং লাহোর ইসলামীয়া কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিগ্রী পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি একজন উর্দু ভাষার লেখক। হিজাজী পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর জেলার ধারওয়াল শহরের পাশের একটি গ্রাম সুজানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার পূর্বেই ১৯৪৭ সালে তার পরিবার লাহোরে বসবাস শুরু করে। তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় পাকিস্তানে কাটিয়েছেন এবং ১৯৯৬ সালের ২ মার্চ তারিখে ইন্তেকাল করেন।