"রোহিঙ্গা রঙ্গ" বইটির শেষের ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ মানুষ নিরাপদ আর উন্নততর এলাকায় মাইগ্রেট করে, অবশ্য কেউ স্বেচ্ছায় ভিসা পাসপাের্ট নিয়ে মাইগ্রেট করে, কেউ রিফিউজি হয়ে। মিয়ানমারের পরিকল্পিত রােহিঙ্গা এথনিক ক্লিঞ্জিং এর সাথে অনেকে হিটলারের ইহুদী নিধন ‘দ্য হলােকাস্ট’ এর মিল খুঁজে পান। অগত্যা অসহায় রােহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে অথবা করতে বাধ্য হচ্ছে। রােহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। একদল বলছে সীমান্ত খুলে দাও; আরেক দল বলছে রােহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাও, আমরা আমাদের নিজেদের সমস্যা নিয়েই যথেস্ট জর্জরিত! বাংলাদেশ ঐতিহাসিক ভাবেই অনন্য এক দেশ! মহাস্থানগড় আর পাহাড়পুরের মত হেরিটেজ আমাদের ছিল, বিখ্যাত মসলিন আমরাই বানাতাম, আমরাই ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি, নয়মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছি, আমাদের আছে লংগেস্ট স্যান্ডি সি বিচ, ক্রিকেট আর শান্তিরক্ষায় আমরাই উঠতি পরাশক্তি! একমাত্র আমরাই আজ প্রায় ১১ লক্ষ রােহিঙ্গাকে ঠাই দিয়ে একটি গােটা জাতির অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখছি! রােহিঙ্গা জনগােষ্ঠীকে বলা হয় “বিশ্বের সবচেয়ে কম প্রত্যাশিত জনপদ” এবং “বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত সংখ্যালঘু' ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইনের। ফলে তারা নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হন। তারা সরকারি অনুমতি ছাড়া ভ্রমণ করতে পারে না, জমির মালিক হতে পারে না এবং দুইটির বেশি সন্তান না নেওয়ার অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে হয়। রােহিঙ্গারা কোন ধর্মাবলম্বী তার চেয়ে ইম্পর্ট্যান্ট একটা এথনিসিটি হারিয়ে যেতে বসেছে। আমরা লুপ্তপ্রায় পশুপাখি নিয়ে সােচ্চার, অথচ রােহিঙ্গাদের ক্রমবিলুপ্তি নিয়ে নির্বিকার প্রায়! প্রত্যেক মানুষেরই বাঁচবার অধিকার আছে, যে কোন পশুপাখির চেয়ে অনেক অনেক বেশি করেই আছে। কিন্তু জেনেভা ক্যাম্পে আটকে পরা পাকিস্তানী রিফিউজিদের পাশাপাশি লাখােলাখাে রােহিঙ্গা রিফিউজি পুষবার সামথ্য কী আমাদের অর্থনীতির আছে?
পেশায় একজন সেনাসদস্য, তবে নেশায় একজন লেখক- ডেল এইচ খান সম্পর্কে এই বাক্যটি অত্যুক্তি হবে না। নিজের পেশাজীবনকে লেখালেখির সাথে যুক্ত করবার অন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। তাঁর লেখা বই ‘আধুনিক দৃষ্টিকোণে সানজুর দ্য আর্ট অব ওয়্যার’ বইটির জন্য তিনি অর্জন করেছেন সেনাপারদর্শিতা পদক। অনলাইনে সিভি লেখার খুঁটিনাটির মতো ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়েও পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, একজন অভিজ্ঞ সেনাসদস্য হবার দরুন তিনি সেনাবাহিনীতে ভর্তিচ্ছুদের জন্য একটি ভর্তি সহায়ক বই ‘তোমাকেই খুঁজছে সেনাবাহিনী’ লিখেছেন, যা কি না বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত কার্যকর। প্রকৃত নাম মোঃ দেলোয়ার হোসেন হলেও পাঠকসমাজের কাছে তিনি ডেল এইচ খান নামেই সুপরিচিত। ১৯৭৯ সালের ২৯শে নভেম্বর ঢাকা জেলায় জন্ম নেন ডেল এইচ খান। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমূহ মূলত ইতিহাসের বিভিন্ন বিখ্যাত যুদ্ধ, রণকৌশল, যোদ্ধাদের জীবনকাহিনী ইত্যাদিকে ঘিরেই রচিত হয়। ব্যক্তিগত পছন্দের জায়গা থেকেই বইয়ের বিষয় নির্ধারণ করেন তিনি। মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ডেল এইচ খান) এর বই সমগ্র বর্তমান সময়ের প্রাসঙ্গিকতাকেও নির্দেশ করে, এক্ষেত্রে তাঁর ‘রোহিঙ্গা রঙ্গ’ বইটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। রোহিঙ্গা জাতির ইতিহাস ও ভবিষ্যত, উভয় সময়ের বাস্তবতাকে নিয়েই বইটি রচনা করেছেন তিনি। তাঁর বইগুলো অনেক বেশি বিশ্লেষণাত্মক; বাস্তব তথ্যকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তিনি বিশ্লেষিত গ্রন্থ উপহার দেন পাঠকদের, বর্তমানে বিশেষ ঘরানার পাঠক জনপ্রিয়তা রয়েছে তাঁর লেখনীর জন্য।