"শ্রীমদ্ভগব্দগীতা যথার্থ গীতা" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ “শ্রীমদ্ভগবদগীতা মানবজাতির ধর্ম-দর্শনশাস্ত্র” “ত্বমাদিদেবঃ পুরুষঃ পুরাণসুমস্য বিশ্বাস্য পরং নিধানম্ ।। বেত্তাসি বেদ্যং চ পরং চ ধাম তৃয়া ততং বিশ্বমনন্তরূপ ॥ গীতা :১১/৩৮ ॥ আপনি আদিদেব এবং সনাতন পুরুষ। আপনি এই জগতের পরম আশ্রয় এবং জ্ঞাতা, জানবার যােগ্য এবং পরমধাম। হে অনন্তস্বরূপ, আপনিই এই সম্পূর্ণ জগৎকে পরিব্যাপ্ত করে আছেন। আপনি সর্বত্র বিরাজমান। ॥ গীতা :১১/৩৮ ॥ “বিশ্ব-সমাজ পরিবর্তণশীল, মনুষ্যজীবন তথা প্রাণীজগৎ নশ্বর, একমাত্র ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীমুখ নিঃসৃত বাণী সত্য, চিরন্তন ও শাশ্বত। ঋক, সাম, যজুর বেদের প্রাণ উপনিষদগুলির সার গীতা, যা অশান্ত জীবকে পরমাত্মার দর্শন করিয়ে সাধারনের স্থিতি থেকে ক্রমশঃ শাশ্বত শান্তির স্থিতি পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়। বেদের অর্থ হল জ্ঞান অর্থাৎ পরমাত্মা বােধ, সেই বাস্তবিক। সত্য বস্তু হৃদয়ে জাগ্রত হয়। ধর্ম হলাে আত্মা ও পরমাত্মার মধ্যে নৈকট্য স্থাপনের প্রয়াস কারণ এই আত্মা অজন্মা, নিত্য, শাশ্বত এবং পুরাতন। দেহ নাশ হলেও আত্মার বিনাশ হয় না। আত্মাই সত্য ও সনাতন। সনাতন ধর্মসাধনার ক্ষেত্রে হিন্দুর উদার সহিষ্ণুতার মূলে আছে শ্রীকৃষ্ণের মহান বাণী। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্বয়ং পূর্ণ সাধনগ্রন্থ। পরমপুরুষ বিশ্বস্রষ্টার অপৌরুষ বাণী ও উপনিষদের দর্শনের সত্যের বাইরে কোন নতুন অধ্যাত্ম সত্য নেই, শুধু স্থান-কাল ভেদে সভ্যতা ও সংস্কৃতিতে সংস্কারের রূপান্তর আছে মাত্র। গীতাশাস্ত্র কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি, জাতি, মত, পন্থ দেশকাল বা কোন গোঁড়া সম্প্রদায়ের জন্য নয়, গীতা সার্বলৌকিক, সার্বকালিক ধর্মগ্রন্থ।