"উকাশের উককথা" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: তবে কি এখন এই না লিখতে পারার দুপুরে কিছু লেখা হচ্ছে এ রকমই একটি প্রায়-নিরুচ্চার প্রশ্ন তাঁর কবিতার শরীরে যেন আলগোছে বুনে রেখেছেন নিখিলেশ। একটি কবিতায় পাঠক স্পষ্টাক্ষরে গ্রথিত একটি অর্ধবিস্মিত উচ্চারণ খুঁজে পাবেন আর সঙ্গে সঙ্গে তার সামনে খুলে যাবে নিখিলেশের কবিতার অন্তর্মুখ। সেই মুখ জীবনের ভাষাজটিল স্তরন্যাসের ভেতর দিক থেকে কথা বলে চেনা শব্দ তার সমাজনির্ধারিত অর্থের সীমা পেরিয়ে যায়; অর্ধচিহ্নিত অনুভবের জগতে পরস্পর অন্তঃপ্রবিষ্ট হতে থেকে দেখা ও না-দেখা প্রকৃতি, বালুটিটি পাখি আর ছেলেবেলা, শীত আর বিষাধ, নদী আর ছলছলে অভিমান। নিখিলেশের কবিতার রচয়িতা নিজেকে লোকচোখ থেকে লুকিয়ে রাখতে ভালবাসেন, নাগরিক বাক্্প্ণের ফাঁকেও নির্মাণ করেন নিজের অবিসংবাদিত প্রচ্ছদ ঃ সেই সপ্রতিভ দিনের ভেতরেই আমি হরপ্পার মতো লুকিয়েছিলাম সিন্ধুর মতো লুকিয়েছিলাম সরস্বতীর মতো...। অথচ কবিতাসন্ধ পাঠক এই রচয়িতাকে নিজের মতো করে আবিষ্কার করে নিতে পারবেন তাঁর স্বরচিত আড়াল সত্তেও, উপরিপাওনা হিসেবে সঙ্গে পাবেন বহুবর্ণ আবেগের অনুষঙ্গ জাগিয়ে তোলা অনেক উদ্ধৃতি দোঁহা-চর্যাপদ থেকে শুরু করে স্ব-কালের কবিতার অনেক স্মরণযোগ্য উচ্চারণ। আরো এক প্রাপ্তির কথা বলব অবিরল অথচ মৃদু ধ্বনিময়তার মতো বৃষ্টি, অকৃপণ অঝোর বৃষ্টি যতটা বাইরের, তারও চেয়ে বেশি ভেতরের।