তথ্য-প্রযুক্তি এবং বিশ্বায়নের কল্যাণে পৃথিবী যখন হাতের মুঠোয়, স্বপ্নের সীমানা তখন মহাশূন্য ছাড়িয়ে যায়। সেই সাত রঙা স্বপ্নগুলো তখন অমাবস্যার অন্ধকারেও দীপ্তমান থাকে। আজকের স্বপ্নই আগামী দিনের পথ চলার প্রেরণা। সেই স্বপ্নের অমিয় সুধায় রয়েছে বেঁচে থাকার সার্থকতা। তাই স্বদেশের সীমানা পেরিয়ে জ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ এখন মেধাবী শিক্ষার্থীদের একটি বহু কাঙ্ক্ষিত স্বপ্ন। উন্নত দেশে পড়াশুনা এবং সেখানকার সংস্কৃতির সাথে পরিচয় একজন শিক্ষার্থীর ক্যারিয়ারে নিয়ে আসে বৈচিত্র্য এবং নতুন মাত্রা। উন্নত বিশ্বের আদলে ক্যারিয়ার গড়তে কাঙ্ক্ষিত দেশে পাড়ি জমানোর কোন বিকল্প নেই। দেশের লেখাপড়ার গণ্ডি পেরিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের ইচ্ছা কম-বেশি সব শিক্ষার্থীরই থাকে। সেই কাঙ্ক্ষিত সোনালি সোপানে দাঁড়িয়ে সবাই প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তির সমীকরণ মেলাতে চায় । সেই সমীকরণ কারো জন্য হয় সরল আবার কারো জন্য বক্র। অদম্য ইচ্ছা আর একটু সাহসিকতাই পারে সেই বক্রতাকে সরলে পরিণত করতে।উচ্চশিক্ষার পাদপীঠ হিসেবে সবাই উন্নত দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজ ক্যাম্পাসে নিজের অবস্থান জানান দিতে চায়। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হওয়ায় সেই স্বপ্ন এবং সম্ভাবনাকে ঘিরে রাখে অসংখ্য বাধা-বিপত্তি। আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং ভালো সিজিপিএ অন্যতম কিছু প্রতিবন্ধকতা। তবুও এই বন্ধুর পথ মাড়িয়ে, মেধাবীদের ভিড়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে, হাজারো শিক্ষার্থী স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছে। উন্নত দেশসমূহ Talent Hunting এর অংশ হিসেবে উন্নয়নশীল এবং অনুন্নত দেশের মেধাবীদের পেছনে বিভিন্নভাবে বিনিয়োগ করে থাকে। তারা Scholar-ship এর মাধ্যমে এসব দেশের শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকে। যেটা আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণে একটি সুবর্ণ সুযোগ। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে, সেগুলো অনুসরণ করেই সামনে এগুতে হবে। এই দীর্ঘ মাধ্যমে সেই সুযোগগুলোকে কাজে লাগানো। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের ইউনিভার্সিটি সিলেকশন, অ্যাপ্লিকেশন, ফান্ড ম্যানেজিং, ভিসা প্রসেসিং ইত্যাদি ক্ষেত্রে নানা জটিলতা, ভোগান্তি এবং অনেক সময়। প্রতারণারও শিকার হতে হয়। আবার দেখা যায় প্রয়োজনীয় তথ্য এবং যথাযথ গাইডলাইনের অভাবে সব পরিশ্রমই পণ্ডশ্রমে পরিণত হয়। উপরোক্ত সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়ে মুনলাইট পাবলিকেশন মেধাবীদের উচ্চশিক্ষার পথকে সুগম করতে ‘বিদেশে উচ্চশিক্ষার গাইডলাইন' হিসেবে বইটি প্রকাশের উদ্যোগ নেয়। বইটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কলারশিপের বিবরণ এবং সেই দেশে গমনের অভিজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সংবলিত একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও এখানে বহিঃ বিশ্বে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীদের করণীয় এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পর্কে আদ্যোপান্ত বিবরণ পাওয়া যাবে। এই ক্ষুদ্র প্রয়াসে যারা বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন, তাদের প্রতি আমরা আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে যাদের লেখা আর্টিকেল এই সংকলনে স্থান পেয়েছে, তাদের এই অবদান জাতীয় উন্নয়নের অংশ হয়ে থাকবে। সর্বোপরি, শিক্ষার্থীর উন্নয়নই, জাতীয় উন্নয়ন। সেই উন্নয়নে অংশীদার হওয়াতেই আমাদের এই প্রচেষ্টার সার্থকতা।