ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা সাহিত্যকে আর্থিক দ্যোতনায় তরঙ্গায়িত করার জন্য উপমা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উপমার ব্যবহারে বাক্য হয়ে উঠে প্রাণবস্তু। বাক্যের অর্থ শ্রুতি সুখকর হয়ে পাঠককে তুলনামূলক ভাব ঐশ্বর্য্য দান করে। কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যের সকল শাখায় রয়েছে উমার চমৎকার ব্যবহার। যা তাঁর সাহিত্যকে নিজস্বতা ও বৈচিত্র্যতা দান করেছে। নজরুল যে প্রকৃতির প্রতিটি কীট-পতঙ্গের সাথেও কত নিবিড় ভাবে মিশেছেন তা তাঁর উপমার ভেতর ফুটে উঠেছে। উপমার ব্যবহারে নজরুল প্রকৃতির সাথে জগৎ সংসারকে, জগৎ সংসারের সাথে প্রকৃতিকে একাকার করে ফেলেছেন। “পুতুল খেলার কৃষ্ণনগর”-এখানে “পুতুল খেলা” উপমাটির ভেতর কৃষ্ণনগর গ্রামটির আর্থ-সামাজিক অবস্থার একটি স্পষ্ট চিত্র প্রকাশমান।“ঝগড়া ত নয়, যেন মোরগ লড়াই” “শিশুই ক্ষুদ্র মুখ ঝলমল করে চিরদুঃখীর কোলে-যেন বর্ষা রাতের স্নান চাঁদ।” এ রকম উপমা নজরুল তাঁর সাহিত্যের পরতে পরতে ব্যবহার করেছেন। নজরুল সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে গবেষণা হয়েছে প্রচুর। কিন্তু তাঁর সাহিত্যে উপমা ব্যবহারের চমৎকারিত্ব্য নিয়ে নজরুল গবেষকগণ রয়েীেছন উদাসীন। ফলে উপমার ব্যবহার নজরুল সাহিত্যের আর্থিক দ্যোতনা কতটুকু সমৃদ্ধ করেছে তাও রয়েছে অজানা। এক্ষেত্রে “নজরুল সাহিত্যে উপমা” গ্রন্থটি নজরুল পাঠক, গবেষক সকলের কাছে নজরুল সাহিত্যের একটি বিশেষ উন্মোচন করবে।