"রশিদ আহমাদ গাঙ্গুহী (রহঃ) জীবন ও কর্ম" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: এ পৃথিবীতে অনেক জ্ঞানী-গুণীজন, ধর্মপ্রচারক, ক্ষমতাধর নেতা, বীরযোদ্ধা, গবেষক, নির্মাতা, লেখক ও কবি এসেছেন। তাঁদের মধ্যে কেউ পৃথিবীতে এনেছে খুশির জোয়ার, কেউ এনেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। কেউ দিয়েছে মানবজীবনে শান্তি, কেউ এনেছে অশান্তি। প্রত্যেক জাতি, গোত্র, সমাজ ও দেশে যুগে যুগে বহু ক্ষণজন্মা মহাপুরুষের আবির্ভাব ঘটে; যারা মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আবির্ভূত হন সমাজ ও জাতীয় জীবনের অভিভাবক ও দিক-নির্দেশক হিসেবে, জাতীয় সংহতির ভিত্তি সুদৃঢ় করার চিন্তানায়ক হিসেবে। যে কজন মুসলিম মনীষী আপন পরিশ্রম, শক্তি ও চিন্তার আলোকে অর্জিত শাশ্বত সত্যের উপলব্ধি থেকে সুন্দর সুশীল সমাজ গঠনে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং নিজস্ব ইলমি পাণ্ডিত্য অর্জন করার সাথে সাথে তাসাওউফ ও কুরআন-হাদিস তথা ইসলামি জ্ঞান-বিজ্ঞানে পাণ্ডিত্য অর্জন করে উপমহাদেশে ইসলামি শিক্ষায় অধিক অবদান রেখে গেছেন, ফকিহুন নফস, ইমামে রব্বানি হযরত রশিদ আহমদ গাঙ্গুহি রহ. ক্ষণজন্মা সেই মহাপুরুষদের একজন। তিনি ছিলেন সমকালীন শ্রেষ্ঠ আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব, যুগশ্রেষ্ঠ শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারক, সাহসী পথপ্রদর্শক, আকাবিরদের যোগ্য উত্তরসূরি, কল্যাণধর্মী সমাজচিন্তাবিদ, ইসলামের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের মোকাবেলায় আপসহীন দৃঢ়কণ্ঠ।
আলোচ্য গ্রন্থে তুলে ধরা হয়েছে হযরতের জন্ম, বংশ ও শৈশব থেকে শুরু করে শিক্ষা-দীক্ষা, বাইয়াতগ্রহণ এবং খেলাফতপ্রাপ্তি সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ এবং ১৮৫৭ সালের মহাবিপ্লবে তাঁর অনন্য ভূমিকা, ইংরেজদের বিরুদ্ধে তাঁর ফাতওয়া, শামেলির রণাঙ্গনের বীরত্বগাথা এবং গ্রেফতার ও জেলজীবনের ইতিহাস। হযরত গাঙ্গুহি রহ.-এর কর্মজীবন ও পাঠদান সংক্রান্ত আলোচনায় উঠে এসেছে দরস-তাদরিসের খুটিনাটি বিষয়াদি, দরসের আদব ও প্রকৃতি এবং ছাত্রদের প্রতি তাঁর যত্নের কথা। তাফসির ও হাদিসশাস্ত্রে তাঁর ব্যুৎপত্তির ধারণা দিতে গিয়ে তুলে ধরা হয়েছে তাঁর ১০টি ইলমি জবাব। পাশাপাশি হযরতের আমল ও স্বভাব-চরিত্রের অধ্যায়ে তুলে ধরা হয়েছে ইবাদতের আগ্রহ, সুন্নতের ওপর আমল, বিদআতের প্রতি ঘৃণা, বিনয়-নম্রতা, ধৈর্য ও সহনশীলতা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা, প্রতিবাদী চেতনা, বক্তৃতা, পোশাক-পরিচ্ছদ এমনকি খাদ্যাভ্যাস ও হাসি-ঠাট্টার কথাও।
আলোচ্য গ্রন্থ দ্বারা পাঠক এই মহামনীষীর জীবনকাহিনি জানার পাশাপাশি উপমহাদেশের ইংরেজবিরোধী আন্দোলনে আলেমসমাজের ভূমিকা, আত্মদান ও কুরবানী সম্পর্কেও ধারণা পাবে এবং আকাবির-আসলাফের জীবনধারা সম্পর্কে যথেষ্ট অবগতি অর্জন করবে, ইনশাআল্লাহ।