দেশ ও জাতি গ্রীস। বিখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক-সাংবাদিক এবং কালজয়ী একুশের গানের রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরী তার অসাধারণ সৃষ্টিশীল হাতে বইটি অনুবাদ করেছেন বাঙালি পাঠকদের জন্য। প্রাচীন গ্রীস জ্ঞানবিজ্ঞানের সুতিকাগার। দর্শনের মহাগুরুদের স্মৃতিধন্য এই দ্বীপদেশ আজো জ্ঞানানুসন্ধানী মানুষদের এক স্বপ্নময় মায়াটানে আকর্ষণ করে। এথেন্স নগরীর কথা মনে হলেই সেই আড়াই হাজার বছরের পেছনের ইতিহাস জীবন্ত বর্তমানের মতাে জেগে ওঠে। মহাজ্ঞানী সক্রেটিস, এরিস্টটল, প্লেটোরা এখানেই মানুষের মধ্যে সত্যের বোধ প্রদীপ জ্বালিয়ে দিতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। তাদের স্মৃতিবিজরিত দেশ গীস। সে দেশের এক অসাধারণ ইতিহাস-গ্রন্থ-‘দেশ ও জাতি গ্রীস’। মূলগ্রন্থের রচয়িতা থিওডাের জিয়ানা কলিস। খ্রিষ্টপূর্ব ৫০০ অব্দেরও আগের ইতিহাসবিদ সােলােন, সুশাসক পিসিস্ট্রাটস, রাষ্ট্রবিদ ক্লীসথেনিককে ইতিহাস কী আশ্চর্য আবেগে ধারণ করে আছে। বলব, এটি শুধু গ্রীক জাতি-রাষ্ট্রের নিছক ইতিহাসই নয়; এখানে একটি জাতির জন্ম, সমাজ, রাষ্ট্র, দর্শন, শিল্প-সাহিত্য, ধর্মভাবনা, বীরত্ব, ট্রাজেডি, মিথ- সবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আমাদের প্রথমেই আকর্ষণ করে অধ্যায়গুলির নাম। যেমন- মর্মর পাথরের হাত, এজিয়ান সাগরের মুক্তা, অলিম্পয়ার উত্তরাধিকার- এসব শিরােনামেই রয়েছে একধরনের মেদুর কাব্যিক মাধুর্য। যারা দূর ইতিহাসের জ্ঞানরাজ্য গ্রীস সম্পর্কে অনেকটাই জানেন, তাদের কাছেও এই বইটি আরাে বেশিকিছু জানার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। অনুবাদকের প্রাঞ্জল, কাব্যময় ও সাবলীল বর্ণনাভঙ্গি সহজেই ইতিহাস-সন্ধিৎসু পাঠকদের আকৃষ্ট করবে। এবং এটাও মনে করি, আমাদের সবার জন্যই নি:সন্দেহে এ-বইটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।