"ধরণীর পথে পথে" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: মানুষের মনের চেয়ে বেশি রহস্যময় আর কিছু কি এই পৃথিবীতে আছে? কোথাও তাজমহলের শুভ্রতাকেও ম্লান করে মন, আবার কোথায় হিমালয়কেও হার মানায় মনের উচ্চতা। কোথাও-বা আবার তা মিশরের মমির অজানা রহস্যকেও ছাড়িয়ে যায়। মানুষের মন আটলান্টিকের গভীরতাকেও লজ্জা দেয়। প্রতিটি মানুষেরই একটা করে মন আছে, আছে একটা করে বিচিত্র জগৎ। আমরা কয়টা মন চিনি, কজনকে জানি? যাদের জানি বলে মনে করি, আসলেই কি তাদের জানি? মানুষের মনের গভীরে নামতে পারা, তার গভীরতা মাপতে পারা, সেই গভীরতার চিত্র-বিচিত্র রূপ দেখতে পাওয়া কি এতটাই সহজ? না, সহজ নয়। কারণ, মানুষ বড়োই দুর্বোধ্য আর বড়োই রহস্যময় এক প্রাণী! মন যা দেখায়, তার পেছনেও দেখার অনেক থাকে। যা জানায়, তার পেছনেও জানার অনেক কিছু থেকে যায়। মন তো কখনোই নিজেকে পুরোটা মেলে ধরে না। কারণ, নিজের পৃথিবীর এ সিংহাসনে মন নিজেই রাজা। এখানে আর কাউকেই সে ভাগ বসাতে দিতে রাজি নয়। এ জন্যই সে একা, বড়ো একা! কী বৈচিত্র্যময় বৈপরীত্য দেখুন তো। এই বৈচিত্র্যময় বৈপরীত্যই মানুষকে রহস্যময় করেছে। এখানেই তার আলাদা স্বকীয়তা। এই স্বকীয়তার সে আগলে রাখে পরম যতনে। আর আগলে রাখতে গিয়ে সে নীরবে হাসে, গোপনে কাঁদে। আপনার আশেপাশে যারা আছেন, চেয়ে দেখুন- ভিন্ন কিছু দেখতে পাচ্ছেন? হাসির পেছনে লুকোনো কান্না কিংবা কান্নার পেছনে লুকোনো হাসি? এ এক অপার রহস্যই বটে! এই রহস্যটা ধরতে পারাটাই হলো বিশ্বকে পড়তে পারা। আসনু, বিশ্বটাকে পড়ে দেখি...
কৃষ্টি আর কুষ্টি’র (পাট) জন্য বিখ্যাত কুষ্টিয়ার সন্তান জিয়াউল হক। জন্ম ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৬০। তৎকালীন পাকিস্থান নৌবাহিনীতে কর্মরত পিতার কর্মস্থল করাচিতেই কেটেছে শৈশব-কৈশোর ও তারুণ্যের দিনগুলো। ১৯৭৪-এ বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুরের ফিলিপনগর প্রত্যাবর্তন। মেন্টাল হেলথ্ নার্সিং, মেন্টাল হেলথ, সাইকিয়াট্রিক রিহাবিলিটেশন-এ পড়াশোনা করেছেন তিনি। সর্বশেষ ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল ইউনিভার্সিটি থেকে মেন্টাল হেলথ, ইএমআই ও ডিমেনশিয়া ম্যানেজমেন্ট কোর্স শেষ করে ইংল্যান্ডেরই একটি বেসরকারি মেন্টাল হাসপাতালের ডেপুটি ম্যানেজার ও ক্লিনিকাল লিড হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এখন লেখালিখিতেই ব্যস্ত। নাবিকের নোঙ্গর হয় ঘাটে ঘাটে। শৈশবেই খেলাচ্ছলে কলম হাতে নিয়ে লিখতে বসা, একজন নাবিক পিতার সন্তান জনাব জিয়াউল হকও জীবনের তিন-চতুর্থাংশ সময়ই দেশের বাইরে কাটিয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ পেরিয়ে চাকরির সুবাদে ইংল্যান্ডে স্থায়ীভাবে অবস্থান করলেও নিয়মিত লেখালেখি করছেন। এ পর্যন্ত তাঁর তিরিশটি গ্রন্থ ও গবেষণাগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তার মধ্যে ‘বই খাতা কলম’, ‘মানব সম্পদ উন্নয়নে আল কুরআন’, ‘ব্রিটেনে মুসলিম শাসক’, ‘বাংলাদেশের শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থা’, ‘ইসলাম : সভ্যতার শেষ ঠিকানা’, ‘ইসলামি শাসন ব্যবস্থা : মৌলিক দর্শন ও শর্তাবলি’, ‘ধরণীর পথে পথে’, ‘অন্তর মম বিকশিত করো’, ‘একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ ও যুব মানস’, ‘তেইশ : দ্য টাইম টু রাইজ আপ’, ‘মন ও মানসিক স্বাস্থ্য’ ও ‘মুসলমান : এ নেশন অব দ্য বুক, আলোর ফেরিওয়ালা’ এগুলো অন্যতম। ধর্ম, সমাজ, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সমসাময়িক বিষয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তিন শতাধিক ফিচার, প্রবন্ধ ও কলাম লিখেছেন। লন্ডন ভিত্তিক বাংলা-ইংরেজি দ্বি-ভাষিক সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ইউরোবাংলা’র তিনি একজন নিয়মিত কলামিষ্ট ছিলেন।