“অন্তরগঙ্গা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ নসিমন খুব সাবধানে মূল ফটকের দিকে হেঁটে যাচ্ছে। তার উদ্দেশ্য পতিতালয় থেকে পালানাে। তার কোলে সদ্য জন্মানাে পুত্র সন্তান এবং পেছনে আট বছর বয়সী কন্যা কোহিনূর। কল্যাণপুর রেস্ট হাউজ’ নামক পতিতালয়ের স্থায়ী পতিতা নসিমন। দুইদিন আগে সে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে। পতিতালয়ের সর্দার নসিমনের কাছ থেকে ছেলেকে কেড়ে নিতে চাচ্ছে। এটাই পতিতালয়ের নিয়ম। পতিতালয়ে কন্যা সন্তান। জন্মগ্রহণ করলে উৎসব হয়। আর পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাকে মায়ের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হয়। পুত্র সন্তানকে বাঁচাতে নসিমন পতিতালয় থেকে পালানাের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। থরথর করে কাঁপছে তার বুক। মূল ফটক দিয়ে সে বের হতে যাবে এমন সময় একজন তাকে দেখে ‘ধর ধর বলে চিল্কার করে ওঠে। পুত্র সন্তানকে কোলে নিয়ে নসিমন দ্রুত মূল ফটক অতিক্রম করে সামনের দিকে এগােতে থাকে। কিন্তু আটকা পড়ে যায় কোহিনূর। নসিমন পড়ল মহাবিপদে। পুত্র সন্তানকে বাঁচাতে হলে কোহিনুরকে রেখে যেতে হবে পাপের আঁতুড়ঘরে। যেখানে কদিন বাদে তাকে বাধ্যতামূলক পতিতাবৃত্তি গ্রহণ করানাে হবে। আর কোহিনুরকে বাচাতে হলে আদরের পুত্র সন্তানের মায়া ত্যাগ করে তাকে আবার এখানে ফিরে আসতে হবে। এখন কি করবে নসিমন?
৪ এপ্রিল চাঁদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ব্যাংকিং এন্ড ইনস্যুরেন্স’ বিভাগে স্নাতকোত্তর করছেন। তার বিশ্বাস লেখার মাধ্যমে যে কোন মানুষের অনুভূতির সবটা ছুঁয়ে দেওয়া যায়। আর মুহূর্তের মধ্যে পাঠ করা যায় মানব হৃদয়ের অপঠিত সকল অনুভূতি। জীবন, সময় এবং অনুভূতির পাশাপাশি নিয়ে তিনি যন্ত্রণার কথা লিখেন। এমন সব যন্ত্রণার কথা লিখেন যা তাকে রাতের পর রাত ঘুমাতে দেয় না। একে একে তিনি লিখেছেন 'আর্তনাদ', 'হৃদকথন', 'মায়াস্নান', 'অন্তরগঙ্গা' এবং 'মনশ্মশান'-এর মত উপন্যাস। 'অন্তরগঙ্গা' উপন্যাসটি প্রকাশিত হওয়ার পর তা পাঠকমহলে রীতিমত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পাঠকপ্রিয় এই উপন্যাসের পর লেখকের নতুন সৃষ্টি 'মনশ্মশান'। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ইতোমধ্যে তার নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘Color Of Life’ নিউ ইয়র্ক, ক্যালিফোর্নিয়া, আফ্রিকাসহ বিশ্বের কয়েকটি খ্যাতনামা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হয়েছে। বর্তমানে কাজ করছেন নতুন স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘Miracle In Heaven’ নিয়ে। উল্লেখ্য, ‘মিরাক্যাল ইন হ্যাভেন’-এর গল্পের জন্য তিনি ইতোমধ্যে ‘UNIECEF’ থেকে নমিনেটেড হয়েছেন। এমনকি একই গল্পের জন্য তিনি জিতেছেন ‘USAID’ অ্যাওয়ার্ড।