তখন দেশটার নাম পূর্ব পাকিস্তান। অমরাবতী, গল্পটা এ দেশের এক ক্রিকেটার বাদলের, যার সামনে কেবলই পাকিস্তান জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন। কিন্তু স্বপ্ন কি হোঁচটবিহীন হয়? তবু তো মানুষ উঠে দাঁড়ায়ও। পুনরায় কি উঠে দাঁড়াতে পারবে বাদল? কেন তাকে অমন ভালোবেসেও দূরে ঠেলে দেয় কান্তা নামের রহস্যময় মেয়েটি—যাকে কখনো চেনা সূত্রে ফেলা যায় না? বাদলকে একরকম জোর করে ক্রিকেটের জগতে এনেছিল নিখিল। অবহেলাময় এই দেশটির জাতীয় দলে প্রথম হিন্দু খেলোয়াড় হিসেবে খেলে ইতিহাস রচনা করতে তৈরি ক্লাব ক্রিকেটে বাদলের ওপেনিং পার্টনার, ইকবাল হলের ৪৬১ নম্বর রুমের সঙ্গী নিখিল। কিন্তু ইতিহাস নিজে কতটা তৈরি? চট্টগ্রাম সিএমএইচে চিকিৎসা নিতে এসে একের পর এক পাকিস্তানি সেনা রহস্যজনকভাবে মারা যাচ্ছে। একদিন পায়ের পাতায় গুলি লেগে ভর্তি হওয়া এক সৈনিক যখন মারা গেল, নড়েচড়ে বসল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ওবায়েদদের কি কোনো ভূমিকা আছে? থাকলে সেটা কী? কী হতে যাচ্ছে তাদের? প্রগাঢ় এক স্বপ্ন নিয়ে বৃষ্টিপুর নামের গ্রামটিতে একটু একটু করে স্কুল গড়েছিল ফরহাদ। সময় তাকে এমন এক পরিস্থিতির সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে যে স্বপ্নের সেই স্কুল ধ্বংস করতে এখন সে পথে-অরণ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সে কি সফল হবে? একমাত্র মেয়েকে নিয়ে হঠাৎ বৃষ্টিপুরে উদয় হয়েছিল রুকাইয়া নামের যে মেয়েটি, তাকে কী যেন বলতে চেয়েছিল ফরহাদের চোখ? সে ভাষা কি সারা জীবনই অবোধ্য থাকবে রুকাইয়ার কাছে? যেকোনো মৃত্যুসংবাদ স্বর্ণকার হরিপদকে বিমূঢ় করে দেয়। একাত্তরের অস্থির সময়টিতে হঠাৎ নিজের পুত্রের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে সে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। পালকপুত্র জামিল তখন যক্ষের ভূমিকায় নেমে পাহারা দেয় পিতার গচ্ছিত অলংকার ও বিশ্বাস। কত দিন পারবে? —এটি মূলত একটা সময়ের আখ্যান, যে সময়টিতে নরককুণ্ডে বসে কতগুলো মানুষ স্বপ্ন দেখছে এক নিরাপদ, নিসর্গময় অমরাবতীর। কত দূরে সেই কাঙ্ক্ষিত অমরাবতী?
জন্ম ৬ ডিসেম্বর। পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। কথাসাহিত্য ও কবিতা—দুই মাধ্যমেই স্বচ্ছন্দ। প্রকাশিত উপন্যাস তিনটি—একচক্ষু হরিণীরা; অমরাবতী; আরও গভীরে। কবিতাগ্রন্থ চারটি—বিব্রত ময়ূর; সুখী ধনুর্বিদ; তৃতীয় অশ্বারোহী; ইহুদির গজল। বিব্রত ময়ূর-এর পাণ্ডুলিপির জন্য মার্কিন গবেষক অধ্যাপক ক্লিনটন বি সিলি ও প্রথমা প্রকাশনের যৌথ উদ্যোগে প্রবর্তিত ‘জীবনানন্দ দাশ পাণ্ডুলিপি পুরস্কার ১৪২২’ পেয়েছেন। একই গ্রন্থের জন্য পরবর্তীকালে পেয়েছেন ‘মাহবুবুল হক শাকিল পদক ২০১৭’। বর্তমানে দৈনিক প্রথম আলোয় কর্মরত।