"ছোটদের ছোট ছোট ছড়া" বইয়ের সংক্ষিপ্ত লেখা: বাংলা ছড়ায় লুৎফর রহমান রিটন এতোটাই প্রতাপশালী যে দুই দশকেরও আগে ১৯৯৮ সালে বাংলা ছড়ার অবিস্মরণীয় স্রষ্টা অন্নদাশঙ্কর রায়ও বলেছেন--‘রিটন তু নে কামাল কিয়া ভাই/ছড়ায় তোমার জুড়ি তো আর নাই।’ এদিকে কবি বেলাল চৌধুরী বলেছেন-- ‘ছড়া আর রিটন প্রায় সমার্থবোধক শব্দ এখন বাংলাদেশে। ছড়া বলতেই মনে আসে রিটনের কথা। আর রিটন বলতেই মনে আসে ছড়ার কথা। ছড়া লিখেও যে তারকাখ্যাতি অর্জন করা যায় রিটন তার একমাত্র দৃষ্টান্ত।’ কবি নির্মলেন্দু গুণ তাঁকে বলেছেন ‘ছড়াসম্রাট’। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ‘আলোকিত মানুষ’ গড়ার কারিগর আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ তাঁর সম্পাদিত ‘লুৎফর রহমান রিটনের সেরা কিশোর কবিতা’ (১৯৯৬)-র ভূমিকায় লিখেছেন--‘লুৎফর রহমান রিটন সাতচল্লিশোত্তর বাংলাদেশের শিশুকবিতার ধারার সবচেয়ে সফল কবি এবং বাংলাভাষার শিশুসাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কবিদের একজন।’ সমকালীন বাংলা শিশুসাহিত্যে অগ্রগণ্য এবং অনিবার্য একটি নাম লুৎফর রহমান রিটন। তাঁর ছড়া বহুল পঠিত। মুখে মুখে ফেরে তাঁর ছড়া। দেয়াল-লিখনও হয় তাঁর ছড়া দিয়ে। দৈনিক পত্রিকার উপসম্পাদকীয় কলামেও উদ্ধৃত হয় রিটনের ছড়া। বাংলাদেশের ঘরে ঘরে বাঙালি শিশুরা বড় হয় রিটনের ছড়া পড়ে। শিশুদের মায়েরা বইমেলায় এসে খোঁজেন রিটনের ছড়ার বই। ছোটদের জন্য লেখা লুৎফর রহমান রিটনের ছন্দে আনন্দে রঙিন ছোট ছোট কিছু ছড়া নিয়েই এই বই-- ‘ছোটদের ছোট ছোট ছড়া’।
Lutfur Rahman Reton পুরনো ঢাকার ওয়ারী এলাকায় তার শৈশব অতিবাহিত হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে নবাবপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে আবুজর গিফারি কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ২০০১ খ্রিস্টাব্দে জাপানে বাংলাদেশের কালচারাল এটাশে নিযুক্ত হয়েছিলেন। সাবেক সম্পাদক হিসেবে ছোটদের কাগজ (অধুনালুপ্ত); জাপানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক ফার্স্ট সেক্রেটারি (২০০০-২০০১) ছিলেন। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থ: ছড়া: ধুত্তুরি (১৯৮২); ঢাকা আমার ঢাকা (১৯৮৪); উপস্থিত সুধীবৃন্ধ (১৯৮৪); হিজিবিজি (১৯৮৭); তোমার জন্য (১৯৮৯); ছড়া ও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ (১৯৮৯); রাজাকারের ছড়া (১৯৯৯); শেয়ালের পাঠশালা (১৯৯২); রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মারকগ্রন্থ (২০০০); নেপথ্য কাহিনী (২০০১)। সম্মাননা ও স্বীকৃতি সিকান্দার আবু জাফর সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, অগ্রণী ব্যাংক শিশু ,সাহিত্য পুরস্কার ১৯৮২, ১৯৯৬, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পুরস্কার ১৯৮৪, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার ২০০৭