"ভেদার্থ শব্দযথা" বইয়ের সংক্ষিপ্ত লেখা: সমোচ্চারিত কিংবা প্রায় সমোচ্চারিত অথচ ভিন্ন অর্থপ্রকাশক শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্র ব্যাপক এবং বিস্তৃত। ভাষার শিষ্ট উচ্চারণ, জনসমক্ষে ভাষণ, গান কিংবা কবিতা আবৃত্তি সর্বত্রই এর গুরুত্ব স্বীকৃত। কবিতা আবৃত্তি বা গানের ক্ষেত্রে কবি-গীতিকারের শব্দ প্রয়োগের উদ্দেশ্য অর্থাৎ শব্দের অর্থ অনুধাবন করে তা প্রকাশ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমোচ্চারিত কিংবা প্রায়-সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দের সীমা ব্যাপক ও বিস্তৃত। অভিন্ন বানান-উচ্চারণ নানা অর্থ, ভিন্ন বানান একই উচ্চারণ আলাদা অর্থ, অভিন্ন বানানে অর্থভেদে উচ্চারণের ভিন্নতা, সমোচ্চারিত কিংবা প্রায়-সমোচ্চারিত শব্দের আলাদা অর্থ কিংবা বিপরীত অর্থ-এমন নানা ধরনের শব্দ সংকলন ‘ভেদার্থ শব্দযথা’। এর বাইরে বাংলা শব্দভাণ্ডারের আরও নানা চিত্র-বিচিত্ররূপের সংকলন বর্তমান গ্রন্থ। বিষয়ের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে সংকলনে প্রবেশ করলে পাঠক সহজেই অনুধাবন করতে পারবেন, প্রচলিত অভিধান চর্চার বাইরে ‘ভেদার্থ শব্দযথা’ একটি ব্যতিক্রমী প্রয়াস। এ যেন বাংলা শব্দভাণ্ডারের বিস্তীর্ণ ময়দানে শব্দের বিচিত্র অর্থসন্ধানী এক মনোযোগী খেলা।
অধ্যাপক ও সাংবাদিক। ১৯৬৮-তে বাংলা ভাষা-সাহিত্যের অধ্যাপনায় যোগদান। বরিশাল সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও ব্রজমোহন কলেজ এবং খুলনা ব্রজলাল কলেজে চাকরি শেষে অবসর গ্রহণ জানুয়ারি ২০০৪-এ। ছাত্রজীবন থেকেই লেখালেখি ও সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে দৈনিক বাংলাদেশ সময়-এর নির্বাহী সম্পাদক। কাজ করেছেন সাহিত্য-তত্ত্ব নিয়ে। লিখেছেন সাহিত্য স্বরূপ, সাহিত্য-সংজ্ঞা, অভিধান, ছন্দ অলঙ্কার রস-তত্ত্ব। এই সূত্র ধরেই প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সাহিত্য-তত্ত্ব সন্ধান। অনুবাদ করেছেন প্লেটোর কাব্য-ভাবনা, এরিস্টটলের পোয়েটিকস, হোরেসের আর্স পোয়েটিকা এবং লঙ্গিনাসের সাহিত্য-তত্ত্ব। এই চার যুগন্ধর পণ্ডিতের সাহিত্য-তত্ত্ব সমন্বয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ধ্র“পদী সাহিত্য-তত্ত্ব। আরও অনুবাদ করেছেন এম এন রায়ের ইসলামের ঐতিহাসিক ভূমিকা ও নয়া মানবতাবাদ; র্যালফ ফক্স-এর উপন্যাস ও জনগণ এবং ই এম ফরস্টারের উপন্যাসের যত বিষয়। সম্পাদনা করেছেন অশ্বিনীকুমারের রচনাসংগ্রহ, মুকুন্দদাসের যত লেখা, মুকুন্দদাসের দেশগান, চারণকবি মুকুন্দদাস প্রসঙ্গ, মাইকেল মধুসূদন দত্ত-র প্রহসন, পরশুরাম ও তার গড্ডালিকা, সত্যেন সেন ধ্র“পদী গণ-কথাশিল্পী, অগ্রন্থিত রণেশ দাশগুপ্ত ইত্যাদি গ্রন্থ।