“বৃষ্টি ভেজা জোছনা" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ নাজমুল হাসান এবং শিখা রহমানের একমাত্র সন্তান অনিক। বয়স আট বছর, ক্লাস টু-এর ছাত্র। একদিন রাতে হঠাৎই অনিক বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। অনেক খুঁজে তাকে পাওয়া গেল বাড়ির বাগানের মধ্যে। জোছনা রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে সে চাঁদ দেখছে আর কার সাথে যেন কথা বলছে। অথচ আশেপাশে কেউ নেই। কার সাথে কথা বলছে- জানতে চাইলে অনিক জানাল, সে তার মায়ের সাথে কথা বলছে। শিখা রহমান এবং নাজমুল হাসান বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে গেলেন। এখানেই শেষ নয়। সময়ের সাথে সাথে অনিকের আচরণে ভয়ংকর সব পরিবর্তন আসতে লাগল। এক পর্যায়ে সে জানাল তার বাবা মৃত এবং তার মা অসুস্থ। মাঝে মাঝে তার মা তাঁর কাছে আসে এবং কথা বলে। সুযােগ পেলে সে তার মায়ের কাছে চলে যাবে। কথাগুলাে শােনার পর শিখা রহমানের শয্যাশায়ী হওয়ার মতাে অবস্থা। কী বলছে অনিক! যে অনিককে তিনি নিজে পেটে ধরেছেন সেই অনিক কি না বলছে তার মা অন্য একজন! সমস্যার সমাধানে নাজমুল হাসান এবং শিখা রহমান এলেন মনােরােগবিশেষজ্ঞ ডাক্তার তরফদারের কাছে। সবকিছু শােনার পর ডাক্তার তরফদার অনিকের অদৃশ্য মাকে খুঁজে বের করার জন্য উঠেপড়ে লাগলেন। কিন্তু এত সহজ নয় অদৃশ্য একজন মানুষকে খুঁজে বের করা! শেষ পর্যন্ত ডাক্তার তরফদার কি পেরেছিলেন অনিকের রহস্যময়ী অদৃশ্য মাকে খুঁজে বের করতে? আর কী ছিল রহস্য?
লেখক মোশতাক আহমেদ এর জন্ম ১৯৭৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর, ফরিদপুর জেলায়। পেশায় একজন চাকুরিজীবী হওয়া সত্ত্বেও লেখালেখির প্রতি তাঁর আগ্রহ প্রচুর। এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন নিয়েই সবচেয়ে বেশি লিখেছেন। বাংলা সায়েন্স ফিকশন জগতে তার পোক্ত একটি অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও মোশতাক আহমেদ এর বই সমূহ ভৌতিক, প্যারাসাইকোলজি, মুক্তিযুদ্ধ, কিশোর ক্ল্যাসিক, ভ্রমণ ইত্যাদি জঁনরাতে বিভক্ত। যেকোনো একটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ না থেকে তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখতেই পছন্দ করেন। মোশতাক আহমেদ এর বই সমগ্র সংখ্যায় পঞ্চাশ পেরিয়েছে। তাঁর প্রথম প্রকাশিত বই ছিল ‘জকি’। এটি একটি জীবনধর্মী উপন্যাস। ২০০৫ সালে এটি প্রকাশিত হয়। মোশতাক আহমেদ পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথমে ফার্মেসি বিভাগে, পরে আইবিএতে। পরবর্তী সময়ে ইংল্যান্ডের লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপরাধবিজ্ঞান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনার খাতিরেই হোক বা কর্মজীবনের তাগিদেই হোক, ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অনেক ভ্রমণ করেছেন। সেসব ভ্রমণকাহিনীর আশ্রয়ে তাই ক্রমেই সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর লেখা ভ্রমণকাহিনীগুলোও। তাঁর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড শুধু লেখালেখিতেই গণ্ডিবদ্ধ নয়। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাজারবাগের পুলিশ ও পাকিস্তানী হানাদারবাহিনীর মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। সে ঘটনার ওপর ভিত্তি করে মোশতাক আহমেদ ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ’ নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। এটি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে মুক্তি পায়। তাঁর পুরস্কারের ঝুলিতে এ পর্যন্ত রয়েছে ২০১৩ সালের কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৪ সালের কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার, ২০১৫ সালের সিটি আনন্দ আলো পুরস্কার এবং সর্বশেষ সংযুক্তি হিসেবে সায়েন্স ফিকশন বিষয়ে বিশেষ অবদান রাখার জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৭।