‘মেঘডুবি’ অন্য এক পৃথিবীর গল্প। খুব পরিচিত, জানাশোনা হলেও এই গল্পের চরিত্রগুলোর নাগাল পাওয়া কঠিন মনে হয়েছে আমার। চিনতে পারিনি। টানা এক বছর ধরে শব্দ আর বাক্যের বুননে বেঁধে যে চরিত্রগুলো আমি আঁকার চেষ্টা করেছি তারা আমার কথা শোনেনি তেমন। জীবনকে আরও বেশি জটিল করে তুলে লজিককে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তারা রহস্য জমিয়ে রেখেছে চারপাশে। কী সব এলোমেলো কাণ্ডই না ঘটিয়েছে! আমি অবাক হয়েছি, চমকে গিয়েছি। লিখতে হয়েছে ঠিকঠাক সব। ফাঁকি দেওয়ার উপায় নেই। তাহমিনা, সুকণ্যা, শিশির আর প্রিয় ক্রাইত নিজেদের গল্পগুলো আমাকে দিয়ে লিখিয়ে নিয়েছে শুধু। এতে অত কৃতিত্ব নেই লেখকের! আমি তাদের অবহেলার বন্ধু হয়েছি। চরিত্রগুলোর আনন্দে মন ভালো হয়েছে, বেদনায় ঝাপসা হয়েছে চোখ। দিনের পর দিন আমার সময়গুলোকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে ক্রাইত, সুকণ্যার জীবনগাথা। ‘মেঘডুবি’ সত্যি জীবনের গল্প? এই প্রশ্নের জবাব প্রয়োজন নেই। ওসব নিয়ে ভাবুন পাঠক। এই আমি সামান্য লেখক ভালোবাসার কাঙাল। আমার প্রয়োজন প্রবল ভালোবাসার। পাঠকের ভালোবাসা। শুধু চাই ‘মেঘডুবি’র মমতা আর ভালোবাসায় আকণ্ঠ ডুবে যাক লাখো, কোটি পাঠক। শুরু থেকেই এই উপন্যাস নিয়ে মানুষের মাঝে যে প্রবল আগ্রহ দেখেছি তাতে সাহস পাই। ‘মেঘডুবি’র পৃথিবীতে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ছুটি নিচ্ছি আমি। একটু ঘুমাব। ‘মেঘডুবি’ আপনাদের হলো। আপনাদের মন জয় করলেই বুঝব আমার নির্ঘুম রাত, উপবাসের দিন, কঠোর পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। ‘মেঘডুবি’ ছড়িয়ে পড়ুক। বইয়ের কথা ছড়িয়ে পড়ুক। পৃথিবী বইয়ের হোক।
কিঙ্কর আহ্সান এর জন্ম ১৯৮৯ সালের ৬ জুলাই কুষ্টিয়া জেলায়। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগে। সেখান থেকেই স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুবাদে সক্রিয় ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় লেখক সংঘ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ, কন্ঠশীলন, মুক্তআসর, বিল্ড বেটার বাংলাদেশসহ আরও অনেকগুলো সংগঠনের সাথে। লেখালেখির শুরু তার দেশের একটি জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে। টানা পাঁচ বছর বাংলাদেশ প্রতিদিন, কালের কন্ঠ, বাংলানিউজ, পরিবর্তনসহ দেশের প্রায় সব শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে লেখালেখি করেছেন। ছোটগল্প লেখার পাশাপাশি কালের কন্ঠের 'বাতিঘর' পাতায় শিক্ষানবিস সাব এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন। সহকারী স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কাজ করেছেন 'কে হতে চায় কোটিপতি' টিভি শো'তে। পাশাপাশি 'মার্কস অলরাউন্ডার', 'হাসতে মানা', 'হ্যান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান পাওয়ার্ড বাই বাংলাদেশ নেভী' ও 'বাংলাদেশ সুপার লীগ-গ্রান্ড লোগো আনভেইলিং' এর প্রধান স্ক্রিপ্ট রাইটার ছিলেন। এই স্বল্প সময়ের সৃজনশীল ক্যারিয়ারেও বেশ সাড়া ফেলেছে কিঙ্কর আহ্সান এর বই সমগ্র। লেখালেখির পাশাপাশি ফিল্মের কাজেও জড়িয়েছেন এই লেখক। 'পাতার নৌকা', 'ক্রিং ক্রিং' ও 'জলপরানি' টেলিফিল্মের কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অনেকের। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সাথে ডকুমেন্টারি নির্মাণের কাজ করেছেন। কাজ করেছেন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও বিজ্ঞাপন সংস্থায়। সবকিছুর পরও যেন লেখালেখিই কিঙ্কর আহ্সান এর আসল জায়গা। বইমেলায় প্রকাশিত 'আঙ্গারধানি', 'কাঠের শরীর', 'রঙিলা কিতাব', 'স্বর্ণভূমি', 'মকবরা', 'আলাদিন জিন্দাবাদ' ইত্যাদি কিঙ্কর আহ্সান এর বই সমূহ, যা বেশ পাঠকপ্রিয়তা লাভ করেছে।