"সাংবাদিক মোস্তাক হোসেন একটি যুগের প্রতীক" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবু শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে। তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা বসন্ত নিকুঞ্জ হাসে বিচিত্র রাগে।।
রবি ঠাকুরের এই গানের কথা আমি মনে করে বলতে চাই, আয়ুর ভাগে আমার কাছের মানুষ মোস্তাক ভাই বড্ড ঠকেছেন। তার মৃত্যু আমাকে গোড়াশুদ্ধ নাড়িয়ে গেছে। যশ-খ্যাতি, প্রতিপত্তি-উচ্ছাকাক্ষার মতো লোভ মোস্তাক ভাইয়ের ছিলনা। সাংবাদিকতার আদর্শে তিনি ছিলেন আত্মশক্তিতে বলিয়ান। আমি তাঁর আর্দশে নিজেকে শাণিত করছি। মানুষ সবচেয়ে বেশি ভয় করে মৃত্যুকে। তাই সবসময় মৃত্যুকে এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াতে চায়। তবুও মৃত্যুকে আলিঙ্গন না করে কোন উপায় নেই মানুষের। মৃত্যুর বেদনা মানুষকে ক্ষনিকের জন্য হলেও পৃথিবীর প্রতি অনাসক্ত করে তোলে। আমি মনে করি মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর হওয়া উচিত নয়। মোস্তাক ভাই মৃত্যু যন্ত্রনায় কাতর ছিলেন না। তিনি আমাকে বার বার বলতেন “১০০ বছর আছি”। তবে অকাট্য সত্য যে জীবনকে আটকে রাখা যাবে না। আমি এই পরম সত্যকে বার বার উপলব্দি করি। মৃত্যু তার শোক ও দুঃখের মাধ্যমে জীবনের সত্যের, মুক্তির ও শক্তির ত্রয়ীরূপকে ফুটিয়ে তোলে। সুতরাং সুখের মতো দুঃখকেও আমি স্বাগত জানাই। স্বাগত জানাই জীবনের মতো মৃত্যুকেও। জীবনকে সত্য বলে জানতে গেলে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তার পরিচয় পেতে হবে। যে মানুষ ভয় পেয়ে মৃত্যুকে এড়িয়ে জীবনকে আঁকড়ে রয়েছে, জীবনের পরে তার যথার্থ শ্রদ্ধা নেই বলে জীবনকে সে পায় না। যে লোক এগিয়ে গিয়ে মৃত্যুকে বন্দী করতে ছুটেছে, সে দেখতে পায়, যাকে সে ধরেছে সে মুত্যুই নয়, সে জীবন। মোস্তাক ভাইয়ের মৃত্যুর পর আমি তার নবজীবনের রূপ দেখতে পাই। এই নবজীবনে তার মৃত্যু নেই। রবিঠাকুরের গান দিয়ে যেমন শুরু করেছি তাই শেষ করছি তার কবিতার মাধ্যমে চারদিকে তার কত আসা যাওয়া কত গীত, কত কথামাঝখানে শুধু ধ্যানের মতন নিশ্চল নীরবতা।
দি অ্যাম্বাসেডর প্রকাশনীর স্বত্তাধীকারি শামীম আহমেদ একজন বাংলাদেশি লেখক গবেষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি ইতিহাস এবং সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন। সাংবদিকতা পেশা থেকে শামীম আহমেদের লেখালেখির গােড়াপত্তন । এই বছরে সাংবাদিকতা পেশায় তার দুই দশক পূর্ণ হবে। সাংবাদিকতা ও লেখালেখি ছাড়াও শামীম আহমেদ সমাজ ও সংস্কৃতির উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কর্মে যুক্ত আছেন। উন্নত ও আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানে সকলের সাথে একত্রিত ভাবে কাজ করতে এই লেখক তৃতীয় সহস্রাব্দের প্রথম শতাব্দীর গােড়ার দিকে প্রতিষ্ঠা করছেন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নতুনধারা ফাউন্ডেশন। সমাজ ও সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তনে তার সংস্থার ভুমিকা উল্লেখযােগ্য। রাষ্ট্রের জন্য কর্ম - বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে শত্রুর আক্রমন থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখায় ভারতীয় ততকালিন সেনা কর্মকর্তা কর্নেল অশােক তারাকে এই লেখক তার সংস্থা নতুনধারা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ২০১২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রধান করছেন। স্বাস্থ্য, কৃষি ও গ্রামীন অর্থনীতি :- এই লেখকের নেতৃত্বে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও নতুনধারা ফাউন্ডেশন যৌথভাবে ৬৪ জেলার সাংবাদিকদের সমন্বয়ে কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির ওপর গবেষনা ও সেমিনার করছেন। জনস্বাস্থ্য সচেতনতায় ফ্রি মেডিক্যাল ক্যম্প ও বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচীর আয়ােজন করে থাকেন এই লেখক। শিক্ষার মানােন্নয়নে কর্ম :- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নতুনধারা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে আন্তর্জাতিক শিক্ষা মেলা ও সেমিনার বহুবার আয়ােজন করছেন এই লেখক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময়ে ভাইস-চ্যান্সেলরের দ্বায়িত্বে থাকাকালে প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সকল সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। নারীর ক্ষমায়ন ও জেন্ডার সমতা :- প্রতিবছর নারী দিবস উপলক্ষে বিশেষ সেমিনার ও নারীর ইতিবাচক কর্মের জন্য পুরুস্কৃত করেন এই লেখকের সংগঠন নতুনধারা ফাউন্ডেশন। গনমাধ্যমের স্বাধীনতা ও জবাব্দ হিতা :- এই লেখক নতুনধারা ফাউন্ডেশনের ব্যানারে প্রতি বছরে একবার ৬৪ জেলার সাংবাদিকদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে (সাংবাদিক উৎসব) প্রশিক্ষন ও তাদের ইতিবাচক প্রতিবেদনের জন্য পুরুষ্কার প্রদানের মাধ্যমে সাংবাদিকদের উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। ধর্ম ও সংস্কৃতি : - এই লেখক একটি অসম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের স্বপ্ন নিয়েই তার সংগঠন নতুনধারা ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। সেই সংস্থার ব্যানারে সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ একত্রিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয়ে সংগীত বিভাগ ও নতুনধারা ফাউন্ডেশনের যৌথ আয়ােজনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল- “লালন দর্শন ও অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সেমিনার। সেমিনারটিতে দেশ বিদেশের নানা ধর্ম বর্ণের মানুষের অংশগ্রহন ছিলাে। বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজের প্রতিনিধি ছাড়াও বিশ্বের খ্যাতিমান লেখক কবি সাহিত্যিক ও গবেষক এবং শিক্ষাবিদগণ সেই সেমিনারে অংশ নিয়ে এই লেখকের প্রশংসা করছেন। অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষে এই লেখকের এমন উলেখযােগ্য কর্ম অনেক। এই লেখক দৈনিক আজকের কাগজের বিশেষ প্রতিনিধি ও ঢাকা রিপােটার্স ইউনিটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রাজনৈতিক বিষয়ক খ্যাতিমান সাংবাদিক প্রয়াত মােস্তাক হােসেনের অসমাপ্ত আত্মজীবনীমূলক বই সাংবাদিক মােস্তাক হােসেন একটি যুগের প্রতীক লিখছেন। বইটির মােড়ক উম্মােচন করছেন বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। বাংলাদেশের দক্ষিন পশ্চিমের জেলা বরগুনায় ১৯৮৮ খৃষ্টাব্দে এই লেখকের জন্ম।