"রোদের গ্রাফিতি বোঝে না রক্তাক্ত বুলেট" বইয়ের সংক্ষিফ্ত কথা: রোদের গ্রাফিতি বোঝে না রক্তাক্ত বুলেট, রোদের গ্রাফিতি কেন, বুলেট আসলে কিছুই বোঝে না। তারপরও অবুঝ বুলেট আর নির্বোধ রোদ কেন কবিতার বিষয় হয়ে ওঠে? কখন-ই-বা ওঠে? তখনই ওঠে, যখন সোজাসাপ্টা বলা যায় না অমোঘ সত্যকে। তখন আশ্রয় নিতে হয় প্রতীকের। ইঙ্গিতে বলে যেতে হয় নির্জলা সত্য। বিমূর্ত রঙে-রেখায় এঁকে যেতে হয় রূঢ় বাস্তব। কবি রিক্তা রিচি কি সেই চিরকালীন পথেই হাঁটলেন? কবুল করতে দ্বিধা নেই, আমরা এখন এক বুলেটবিদ্ধ সময়ে বাস করছি। এই সময়ের বাসিন্দা হয়ে যে ভাষায় কাব্যচর্চা করা উচিত, রিক্তা রিচি ঠিক সেই ভাষাটিই রপ্ত করেছেন। কবির তৃতীয় কাব্যগ্রন্থখানি তাই ভরে উঠেছে ইঙ্গিতময় ভাষার ফুলে ও ফসলে। এর পাতায় পাতায় ঝরা-শিউলির মতো ছড়িয়ে আছে অজস্র ইঙ্গিতময়তা। সে ইঙ্গিত কখনো প্রেমের, কখনো কামের, কখনো দ্রোহের, কখনো করুণ, কখনো কঠোর। অতএব বলা যেতেই পারে, কোমল-কঠোরের অবিমিশ্র অনুভূতি দুই মলাটে বাঁধা পড়েছে এখানে। এই মলাট খোলার সময় এখন আপনার, প্রিয় পাঠক। মলাট খুলে প্রবেশ করুন ‘রোদের গ্রাফিতি বোঝে না রক্তাক্ত বুলেট’-এ, আর স্নান করুন কাব্যধারার পবিত্র জলে। কবি রিক্তা রিচি’র ইঙ্গিতময় কাব্যভাষা, প্রতীকধর্মী ব্যঞ্জনা, অনুভূতির নিটোল বয়ান আপনার বোধকে নাড়িয়ে দেবে, পরিশুদ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। কবিতার কাজ নিছক বিনোদন-বর্ষণ নয়, আত্মাকে শুদ্ধ করা—তাই নয় কি?
রিক্তা রিচির জন্ম ৮ ই নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানার নবীপুর গ্রামে। ছোট থেকে ঢাকায় বসবাস। ২০১০ সালে মোহাম্মদপুর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এস এস সি এবং ২০১২ সালে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হোম ইকোনোমিকস কলেজের 'সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনরশীপ' বিভাগ থেকে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পড়াশোনা শেষে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। বর্তমানে তিনি সমকাল পত্রিকার লাইফস্টাইল ও ফ্যাশন ট্যাবলয়েড শৈলীর দায়িত্বে আছেন। রিক্তা রিচি কবিতা লিখতে ভালবাসেন। নিয়মিত লিখছেন বাংলাদেশের বিভিন্ন ম্যাগাজিন, পত্রিকা ও জাতীয় দৈনিকসহ ভারতের বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রিকায়। ২০১৬ সালে একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'যে চলে যাবার সে যাবেই'। ২০১৮ সালে বইটির দ্বিতীয় মুদ্রণ বের হয়। ২০১৯ সালের একুশে বইমেলায় ‘অগ্রদূত অ্যান্ড কোম্পানি’ থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'বাতাসের বাঁশিতে মেঘের নূপুর'। ২০২০ সালের অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয়েছে তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘রোদের গ্রাফিতি বোঝে না রক্তাক্ত বুলেট’। ২০২৩ সালের অমর একুশে বইমেলায় দেশ পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে তার চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ 'আমাকে লিখে রাখো'।