“কয়েদি নম্বর ৩৩২" বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ চৌদ্দটি গল্প নিয়ে কথাসাহিত্যে শারমিন রহমানের নতুন যাত্রা; এ যাত্রা প্রতিশ্রুতির, সৃজন ও মননের। পেশায় শিক্ষক শারমিন দৃষ্টির পারদে জমে থাকা সম্পর্কের সুর, যাপিত জীবনের ধুলাে, কালি, আর দীর্ঘশ্বাসের জীবন ছেকে শব্দে-বুননে তুলে দেন আখ্যান। কী আছে কয়েদি নম্বর ৩৩২-এ? হাসনাবাদ রেল স্টেশন, কিছু ঘুপচিঘর, তুলসীতলা, তপনবালা, হরেন স্যার, মাতবর চরের শেষ বাড়িটার মাতবর। কুমার নদীর বর্ষার জল, ফুলবানু, শিমুলতলী অথবা মামুন মােস্তাফিজ; এক লেখক; যার বুক পকেটে জমে থাকে হলুদ চিরকুট। আছে সেইসব মানুষ; যাদের কুকুরী জীবন অথবা কুকুরের সংসার। বন্যা আর সৌরভ; খসেপড়া তারা, সৌদি থেকে নির্যাতিত হয়ে ফিরে আসা অনেকের মধ্যে না ফিরে আসা বন্যার মা, ফুটফুটে ধর্ষিত ফুলের প্রতিবাদহীন মুখ। পাট কাটতে আসা সেই লােকটা যার সাথে শেফালির ভাব হয়েছিল একসময়। নিলুফার একাকী দিনরাত্রির গাঢ় বিষাদেরা এখানে সিম্ফোনি বাজায় অহর্নিশ! । এ সমাজ লেখকের প্রশ্নে বিদ্ধ হয়েছে, তাঁর উঁচিয়ে ধরা আঙুল সেদিকেই, যে দিকটা দগদগে, যে দিকটা অন্ধকার। চিরায়ত। সময়ের, প্রতিটি জনপদের কলহাস্যে ঘটে যাওয়া যে। জীবননাট্য; মলাটবদ্ধ কয়েদি জীবনে সে গল্পের বয়ানই মুহুর্মুহু। গল্পগুলাে পাঠক সমাদৃত হবে- এ প্রত্যাশা রাখাই যায়।
শারমিন রহমান পেশায় একজন শিক্ষক। তিনি একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। শারমিন রহমান গ্রামে বেড়ে উঠেছেন এবং গ্রামে বসবাস করেন। তিনি গ্রামের মানুষের জীবন দেখেছেন খুব কাছ থেকে। গ্রামীন পরিবেশ , মানুষের জীবন, জীবনের নানা অন্ধকার দিক,অসঙ্গতি তার হৃদয়কে আন্দোলিত করে। তার লেখায় তাই পোড় খাওয়া মানুষের জীবন অথবা জীবনের ভেতরকার যে অন্ধকার রুপ আছে তাই উঠে আসে বারবার। শারমিন রহমান ১৯৮৭ সালের ৭ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলার ভাংগা উপজেলার পূর্ব সদরদী গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার প্রকাশিত বই " কয়েদি নম্বর ৩৩২" ( গল্পগ্রন্থ) , "নির্মাতা তারেক মাসুদ "( জীবনীগ্রন্থ) , "প্রিয় সমুদ্র" ( পত্রকাব্য) এবং" ন মানুষ"( গল্পগ্রন্থ)। নির্মাতা তারেক মাসুদ বইটির জন্য শারমিন রহমান পেয়েছেন " তারেক মাসুদ অ্যাওয়ার্ড" এবং সাহিত্য দিগন্ত লেখক পুরস্কার।