পজিটিভ সাইকোলজি শুধু মানসিক সমস্যা বা রোগ নিয়ে ব্যস্ত থাকে না, এটি আমাদের স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, আরো উন্নত, সবল ও বলশালী কিভাবে করা যায় এবং অন্তর্গত সম্ভাবনাকে কিভাবে জাগিয়ে নিজের সুপ্ত শক্তির পূর্ণ ব্যবহার করে নিজের সর্বোচ্চ ও সর্বোত্তম বিকাশ সাধন করা যায়, সেদিকে দৃষ্টিপাত করে। পিজিটিভ সাইকোলজি যে কোনো বিপর্যয়ের পর স্বাভাবিক অবস্থায় দ্রুত ফিরে আসা ও ঘুরে দাঁড়ানো; অন্যদের আবেগ অনুভূতির প্রতি একাত্ত হওয়ার ক্ষমতা; চাপ নিয়ন্ত্রন ও আবেগ নিয়ন্ত্রন দক্ষতা ও কার্যকরী যোগাযোগ ও সুসম্পর্ক তৈরি; সামাজিক পরিস্থিতি ও দ্বগ্ধ বুঝতে পারা প্রভূতি অর্জনে সহায়তা করে। আমাদের আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা যেমন বাড়ায়, তেমনি মনের সুখও বৃদ্ধি করে। যদি আমাদের আবেগ দমনে দক্ষতা না থাকে, এভাবে যদি আত্ম-সচেতন না থাকি, যদি কার্যকর আবেগ ম্যানেজ করতে না পারি, যদি কার্যকর সম্পর্ক না থাকে, তাহলে আমরা যতই স্মার্ট হই না কেন-আমরা বেশিদূর এগোতে পারবো না। আই, কিউ তেমন বাড়ানো যায় না। কিন্তু ই-কিউ যে কোনো বয়সে, ক্রমাগত চেষ্টা ও অনুশীলনীর মাধ্যমে বৃদ্ধি করা যায়। আমাদের জীবনে সফলতার মাত্র শতকরা ২০ ভাগ নির্ভর করে আইকিউ এর উপর, বাকীটা নির্ভর করে ই. কিউ’র উপর। আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা বাড়ানো ও সুখী জীবন গড়তে সবার জন্য এটি সহায়ক গ্রন্থ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
অধ্যাপক ডা. মােঃ তাজুল ইসলাম একজন সাইকিয়াট্রিস্ট (মনােরােগ বিশেষজ্ঞ)। জন্ম : চাঁদপুর জেলার মতলব থানাধীন পশ্চিম বাইশপুর (বালুচর)। গ্রামে। পিতা : দেওয়ান আবদুল খালেক। তিনি মতলবগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। ১৯৯২ সালে সাইকিয়াট্রিতে উচ্চতর এফসিপিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অধ্যাপক হিসেবে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে কর্মরত রয়েছেন। মানসিক রােগের চিকিৎসা বিষয়ে উচ্চতর প্রশিক্ষণের জন্য হু-এর ফেলােশিপ অর্জন করেন ব্যাংকক, থাইল্যান্ড থেকে। পরবর্তী সময় আরাে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। জাইকা ফেলােশিপ পান জাপান থেকে। মনােসামাজিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও স্বাস্থ্য সাময়িকীগুলােতে যেসব মনোেরাগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণ লিখে আসছেন, তিনি তাদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। তার মনের সুখ মনের অসুখ ও ‘মানসিক সমস্যা : ধরন কারণ ও প্রতিকার’ ‘শিশুবিকাশ-১, ২, ৩’, ‘টিন-এজ মন : সমস্যা ও সমাধান, ‘উদ্বেগ-টেনশন : মনােবৈজ্ঞানিক সমাধান, ব্যক্তিত্ব ও আত্মমর্যাদাবােধ : সবল ও মজবুত করার মনােবৈজ্ঞানিক কৌশল” শিরােনামের মনােবিজ্ঞানের বইগুলাে ইতােমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। ডাক্তার ও মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্য একটি ইংরেজি ম্যানুয়েলও তিনি প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও তার অনেক মৌলিক গবেষণা-কর্ম রয়েছে। এখনাে লেখালেখি ও গবেষণা কর্মে নিজেকে নিয়ােজিত রেখেছেন। তিনি এক ছেলে ও এক কন্যা সন্তানের জনক।