”ভাঙি অচলায়তন” বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: ‘নিজেকে পরিবেশন না করে/এসো পরিবেশ বানাই।’ লাইন দুটির চমৎকারিত্বে খুব সহজেই প্রতিবাদের স্বরূপ প্রকাশমান। নারীদের প্রতি সম্মান এবং চিরায়ত বৃত্ত ভেঙে সম্মুখে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান খুঁজে পাওয়া যায় এই কবিতায়। সমাজের অসংগতি, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সর্বোপরি মনুষ্যত্বের অস্তিত্বহীনতা কবি মনকে আলোড়িত করে। সত্যি কথা বলতে কি প্রত্যেকটি মানুষ তার জীবন ও সমাজকে পরিষ্কারভাবে বুঝেন, আর কবি বা লেখকরা তা অনুসন্ধান করেন, নিবিড়ভাবে পরখ করেন। প্রত্যেক লেখকের চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি, বাক্য বিন্যাস, শব্দ চয়ন, রুপক, রিদম, ঝংকার স্বতন্ত্র এবং স্বকীয়। কবি সাদিয়া নাজিবের কাব্যগ্রন্থ ‘ভাঙি অচলায়তন’-এ কত শব্দ আছে তা বলতে গেলে আমার ধারণা অনুপাতে প্রায় পাঁচ হাজার হবে। পাঁচ হাজার শব্দের মাঝে এমনও হতে পারে- কিছু কিছু শব্দ আগামী প্রজন্মের জন্য বাণী হয়ে থাকবে। শব্দের জাদুকরীতে সমৃদ্ধ এই কাব্যগ্রন্থটি। তাই কবি সাদিয়া নাজিবের কয়েকটি লাইন তুলে ধরে আলোচ্য বিষয় সংক্ষিপ্ত করতে হবে। যেমন- ‘ভয় শুধু একটাই/যদি সত্যি রাজা হয়ে যাই!’ সবাই তোমার অধিকার/ আমি তবে কে আমার? ‘জানি আমাকেই খোঁজ প্রতিদিন/ সুবেহ-সাদিক থেকে সায়ংকাল/ কিংবা রাতদিন অহর্নিশি!’ সুন্দর উপমা এবং আকর্ষণীয় শব্দের সমন্বয়ে গ্রন্থিত ‘ভাঙি অচলায়তন’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠকের মনে নতুন ভাবনার যেমন উদ্রেক করবে তেমনি বাংলা শব্দের প্রাচুর্য সম্পর্কে পাঠককে আরেকবার পরিচয় করিয়ে দেবে। আমি আশা করি এই কাব্যগ্রন্থটি সর্বমহলে পাঠকের নজর কাড়তে সক্ষম হবে।