"সন্ধে নামার আগে" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: একটা খুব অনভিপ্রেত স্বপ্ন বুকের মধ্যে জেগে উঠল, হুট করে। যার ভেতর অংশুক স্বয়ং নিজেকেই আবিষ্কার করলো। সে মনে করলো, এ এক অমোঘ সত্যের নাম। যাকে সে নিজেরই পূর্বজন্ম ভাবতে পারে। নইলে এ স্বপ্নকে কেন এত ব্যক্তিগত মনে হয়? কেন সুস্মিতাকেও কখনো বলা হয়ে উঠলো না সেকথা? অপরাজিতা একদিন তাকে নিমন্ত্রণ করে এনে সেই অনুচ্চারিত সত্যকে ফের জাগিয়ে তুলল, যা অংশুক অজান্তেই একযুগ হলো খুঁজে বেড়াচ্ছে। এই অধরা সত্যের আঁচই তো সে স্বপ্নের মধ্যে পেয়েছিল। এরপর কত রাত্তিরে সে প্রেমিকার গন্ধের মতো এক তন্দ্রাচ্ছন্নতার মধ্যে দিয়ে গেছে। বারবার সে দেখেছে—তার ভেতর সুধীর নামের আরেকটা সত্ত্বা বাস করে। একদা শিল্পের যে অর্ঘ্য সুধীর পেয়েছিল, সেই বেদনা অংশুক রায়কে মুহূর্মুহূ তার বাবার কথা মনে করিয়ে দেয়। যে কি না খুব অসময়ে জীবন থেকে পালিয়ে গেছে। কেন গেছে—সারাজীবন এই উত্তরটুকু খুঁজতে গিয়েই কি মানুষটাকে ঘেন্না করতে করতে বুড়িয়ে যাচ্ছে রমা? কিংবা আজাদ? অংশুক তাকে আবিষ্কার না করলে কি কেউ কখনো জানতে পারতো—কেন অপরাজিতাকে অমন করে সে ভালোবাসলো? অথচ এখন কেন বাসছে না? খুব নিভৃতে সুকন্যার দিকে ঝুঁকে যাচ্ছে সে। যেমনি করে রাতের বুকে একটা সন্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাত্র বাইশ বছরের এক জীবনে পথ চলতে গিয়ে কেবলই কোনো না কোনো সন্ধের মুখোমুখি হয়ে যাচ্ছে অংশুক। যেরকম সন্ধে বুকে করে মানুষ বেঁচে থাকা ভুলে যায়।