"দখিনের দ্বীপ" বইয়ের সংক্ষিপ্ত কথা: নিরক্ষর দিনমজুর জলিল গাজীর মেয়ে আসমারকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চেয়ারম্যানের ছেলে তার কাম লিপ্সা চরিতার্থ করে। লজ্জা থেকে বাঁচতে আসমা বেছে নেয় আত্মহননের পথ। তার ভাই জহির তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন বাবার পরামর্শে প্রতিশোধ নিতে চেয়ারম্যানের কন্যার সাথে প্রেমের অভিনয় করতে গিয়ে নিজেই প্রেমে পড়ে যায়। একদিন গভীর রাতে জলিল গাজীর পুরো পরিবার চেয়ারম্যানের অষ্টাদশী কন্যা ফুলবানুকে নিয়ে নৌকাযোগে পালিয়ে আশ্রয় নেয় সাগর মোহনায় এক জনবিরল ছোট্ট দ্বীপে। চেয়ারম্যানের রোষানল থেকে বাঁচতে এ ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না তাদের। ক’জন মানুষের প্রাণান্তকর চেষ্টায় ঐ দ্বীপ একসময় ভূস্বর্গে পরিণত হয়। জলিল গাজীর দিকনির্দেশনায় এবং ফুলবানুর বুদ্ধিমত্তায় তার স্বামী এবং পুরো পরিবার আবার ফিরে আসে নিজেদের বসত ভিটায়। এ কাহিনি একাধারে প্রেম ও প্রতিশোধের, জোতদারের বিরুদ্ধে দিনমজুরের প্রতিবাদের, একজন নিরক্ষর স্বশিক্ষিত সৎ ও মানবিক জলিল গাজীর, যে জোনাকির আলোর মতো নরম, আবার প্রয়োজনে তীক্ষ্ণ ধার কৃপাণ। কাহিনির মূল উপজীব্য ভালোবাসা ও মানবিকতার, যা ক্ষণে ক্ষণে আপ্লূত করবে পাঠক হৃদয়।
বাংলাদেশের যে মুষ্টিমেয় বুদ্ধিজীবী জীবননিষ্ঠ মননের সদনুশীলনে আত্মনিয়োজিত : শহিদুল ইসলাম নিরলস চর্চার মধ্য দিয়ে নিজেকে সেই গোষ্টীর অন্যতম কর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে নিতে পেরেছেন। গত দুই দশক ধরে তিনি লিখছেন। সমাজনীতি, রাষ্ট্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বিজ্ঞানমনস্কতা, শিক্ষা, শিক্ষাব্যবস্থা ইত্যাদি নানা বিষয় নিয়ে অনবরত লিখে চলেছেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। সমাজের অনাচার, কুসংস্কার, অন্যায়, অবক্ষয় লেখককে পীড়া দেয়। তিনি স্বপ্ন দেখেন বৈষম্যহীন এক সমাজব্যবস্থার, অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থারÑ যেখানে মানুষ পাবে মানুষের অধিকার। সাম্প্রদায়িকতা যে মানবতার শত্র“, রাজনীতিতে যে ধর্মের স্থান থাকা উচিত নয়Ñ এ বিষয়গুলো নিয়ে তাঁর গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। তিনি বিজ্ঞানের দর্শন নিয়েও গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেন। মানুষ নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের চর্চা করে চলেছে। তারই ফলে কোনো স্থান কখনো বিজ্ঞনের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছে, আবার কোথাও অজ্ঞতার গভীর অরণ্য বিরাজ করছে। কেন এই উত্থান-পতন? শহিদুল ইসলাম এই বইতে এর অন্তর্নিহিত কারণ খোঁজ করেছেন। শহিদুল ইসলামের জন্ম ১৯৪০ সালে ১০ ফেব্রুয়ারি। তিনি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলিত রসায়ন বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষকদের একজন ছিলেন। ২০০০-২০০৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবপ্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে প্রতিষ্টাতা পরিচালক ছিলেন।