"আবর্তন" বইয়ের সংক্ষিপ্ত করা: না চাইতেই মনিজার ফেলে যাওয়া সমস্ত সুখ-শান্তি আমার হাতে এসে ধরা দিয়েছে। স্বামীর আদর, ভালোবাসা, সন্তানের মমতা, বাড়ি, গাড়ি অর্থ সব পেলাম অযাচিতভাবেই। জীবন কানায় কানায় ভরে উঠল। কিন্তু কী একটা অদৃশ্য শক্তি যেন অহর্নিশি আমায় খোঁচাতে লাগল। স্যাটেলাইট ক্যামেরার মতোই একজোড়া চোখ যেন আমায় অদৃশ্য থেকে সারাক্ষণ অনুসরণ করতে শুরু করল। আমি অচিরেই হাফিয়ে উঠলাম। আমার সমস্ত আনন্দ, সমস্ত সুখ যেন হতাশায় বিলীন হতে শুরু করল। আমি সারাক্ষণ ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকতাম। রাতের বিছানায় আমার আর স্বামীর মাঝখানে যেন শীতল স্রোত বয়ে যেতে শুরু করল। ধীরে ধীরে সেই চোখ স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হলো। একসময় আমি চোখের সাথে সাথে মানুষটির আবছা একটি অবয়বও দেখতে শুরু করলাম। সে নিশুতি রাতে সারা বাড়ি হেঁটে বেড়ায়। তার সাজানো শোবার ঘরে, খেলাঘরে আমি তার উপস্থিতি টের পেতাম। খুব আপন, খুব ভালোবাসার এই মানুষটিকে ভয় পাচ্ছি ভেবে আমার এক ধরনের অনুতাপও হচ্ছিল। কিন্তু কী করব? জীবিত ও মৃতের মাঝে জীবন যেন বিশাল দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। এই ব্যবধান ঘোঁচাতে হলে জীবন বিসর্জন দেওয়া ছাড়া আর তো কোনো উপায় নেই। হিমশীতল মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেই কেবল আমি তার কাছে পৌঁছাতে পারি।