সভ্যতার সেই আদিলগ্ন থেকে পরিবারকে মানব শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে গণ্য করা হয়। পরিবার থেকে শিশুরা জীবন সম্পর্কে যাবতীয় প্রাথমিক ধারণাগুলো পেয়ে থাকে এবং সুন্দর আগামীর গন্তব্যে ধাবিত হয়। এই ক্ষেত্রে পিতা-মাতা যদি শিক্ষিত হয় বা সন্তানের প্রাথমিক শ্রেণিগুলো সম্পর্কে জ্ঞানদানের যোগ্যতাসম্পন্ন হয়, তবে ভালোই হয় বেশি। ধনাঢ্যদের অনেকে আলসেমি করে শিশুদের বর্ণ পরিচয়ের (অ,আ,ই,ঈ) ব্যাপারটাও গৃহ শিক্ষকের উপর অর্পণ করে থাকেন। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি এটা সঠিক সিদ্ধান্ত না। প্রাথমিক পর্যায়ে শুধুমাত্র স্বরবর্ণের আয়ত্ত করতে শিশুর দীর্ঘ সময় লেগে যায়, লেখার ক্ষেত্রে সময়টা আরো বেশি। অথচ একজন গৃহ শিক্ষক তাকে সময় দিবে এক ঘণ্টা বা তার কিছু অধিক। শিশুর শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটা নিয়ে ভেবে দেখা একান্ত জরুরি। বলতে চাচ্ছিলাম, শিশুদের প্রাথমিক পাঠ্যগুলো পাঠদানের বিষয়টা গৃহ শিক্ষকের উপর ন্যস্ত না করে, শিক্ষিত অভিবাবকরা নিজ দায়িত্বে তুলে নিলে ভালো হয়। উপন্যাসের মূল চরিত্র গৃহবধূ রেশমীর শিশু কন্যা রুমির প্রাথমিক শিক্ষার দায়িত্বটা আলসেমি করে গৃহ শিক্ষকের উপর তুলে দেয়ার ফলে ঘটতে থাকে একের পর এক অঘটন। যে অঘটনগুলোর পিছনে মূল উপাদান ছিল জৈবিক চাহিদা। প্রেম মানব চরিত্রের এক অপরিহার্য অংশ। প্রেম নিয়ে মানবমনে আগ্রহ থাকলেও পরকীয়া নিয়ে ব্যক্তিমনে রয়েছে নানা সংশয়। চলমান সময়ে এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনাটি খুব পরিলক্ষিত হয়। শিক্ষকের কদর সমাজ ব্যবস্থায় অনাদিকাল ধরে। শিক্ষাগুরুর সম্মানের মুকুটটি ধরে রাখার দায়িত্ব এই শ্রেণির সম্মানীয় ব্যক্তিবর্গের। পরিতাপের বিষয়, সভ্যতার আবর্তনের সাথে সাথে শিক্ষক শ্রেণির একটি অংশের রুচিবোধের আমূল পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ গড়ার কারিগরদের দ্বারা নানা সময়ে এমন অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো ঘটছে, যেগুলো কোনোভাবেই কাম্য নয়। উপন্যাসটিতে সমাজ ব্যবস্থার সমসাময়িক কিছু সমস্যা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সমাধানের সূত্রগুলো পাঠক মহলের জন্য অখ-িত রেখে দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে সমস্যার সাথে সমাধানের উপায় উদঘাটনে একত্রে কাজ করব। উপন্যাসটি প্রকাশনারক্ষেত্রে প্রিয় প্রকাশক আনিস সুজনসহ ‘অক্ষরবৃত্ত’ পরিবারের অপরিসীম আন্তরিকতা কখনো ভুলার নয়। স্নেহের ছোটো ভাই ফরহাদও খুব কষ্ট করেছে বইটি প্রকাশনার ক্ষেত্রে, তার জন্য অনেক প্রীতি ও শুভেচ্ছা।
মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল ১৯৮৭ সালের ১৬ ই ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত ছাদেক নগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মুহাম্মদ মুছা ও মাতা কামরুন নাহার কদল। তড়িৎ প্রকৌশলে ডিপ্লোমা এবং স্নাতক করেন তিনি। সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ সেই ছোটবেলা থেকে। তাঁর লেখায় প্রকাশ হয় কখনো দেশপ্রেম, কখনো অনিয়মের বিদ্রোহ, আবার কখনো বা প্রেম। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন এবং সাহিত্যের ছোট কাগজেও তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়েছে।