যে কথাগুলো মনের মধ্যে জমতে জমতে এক সময় চাপা পড়ে যায় অথবা বলবো বলবো করেও বলা হয়ে উঠেনি কিংবা পারিনি, সেই কথাগুলো বলতে পারাই আমার কাছে কবিতা। কবিতাটা কাউকে মোহিত করার জন্যে নয়, কবিতাটা একান্ত আমার। আমি যখন ইচ্ছে তাতে ভেসে বেড়াবো অথবা ডুবে মরবো। নিজের একটা আকাশ তো প্রত্যেকের থাকা চাই, কবিতা আমার তাই। আমি লাল, নীল স্বপ্নের ঘুড়ি উড়াই আমার আকাশ জুড়ে। বইটিতে ৪৮ টি কবিতা আছে এবং প্রতিটি কবিতাই আমার প্রথম প্রেম। প্রতিটি কবিতাই আমার কাছে বড় ভালোবাসার, বলতে না পারা জীবনের গল্প। যাঁর চোখে চোখ রেখে সুরাঘর থেকে কাবাঘরে পৌছে যেতে পারতাম এক লহমায় কিংবা পূর্বজন্ম ভুলে মহাপুরুষের কাতারে এসে দাড়াতে পারতাম, তাঁকে বলতে পারিনি ভালোবাসি। অথবা যাকে ঘৃনা করি তাকে দুমড়ে মুচড়ে করতে পারিনি একাকার। কখনোই কবিতাকে খুজতে যাইনি আমি বরং কবিতাই আমার পায়ে লুটিয়েছে বারংবার। কেননা তুমি ছিলে। যখন কবিতারা লুকোচুরিতে মত্ত থাকে আমি তোমাকে লিখতে বসে যাই, কেমন অবাক করে সমস্ত কথাই এক একটি কবিতা হয়ে যায়। আমি চিরঋনী থেকে যাই তোমার কাছে, সমস্ত ফুলের কাছে, নদীর কাছে, আমি চিরঋনী থেকে যাই...................
মিলটন সফি। গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে আবির্ভূত হওয়া একজন কবি ও কথা সাহিত্যিক। মূলত কবি হিসেবেই নিজেকে পরিচয় দিতে ভালোবাসলেও সাহিত্যের নানা ক্ষেত্রে রয়েছে তার সাবলীল বিচরণ। জন্ম ১১ই আগষ্ট ১৯৮১ [২৭ শ্রাবণ ১৩৮৮] ফরিদপুর, বাংলাদেশ। বিজনেস এডমিনিষ্ট্রেশনে মাষ্টার্স। স্ক্রিপ্ট রাইটার হিসেবে কর্মজীবনের শুরু তারপর নানা অভিজ্ঞতা। বর্তমানে একটি বেসরকারী ব্যাংকে ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন্স ডিভিশনের কর্ণধার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন আধুনিক কবি, মন ও মননে। শ্রেণীসংগ্রাম, প্রকৃতি-জীবন, প্রেম ও নারী তার কবিতার মূল বিষয় হিসেবে বার বার উঠে এসেছে। কাউকে মোহিত করার জন্যে কবিতা লেখেননা তিনি। আবার কখনো কখনো তার মনে হয় তিনি কবিতা লেখেন না বরং কবিতাই তাকে লিখে বেশী। নামে বেনামে লিখেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রায় সমস্ত পত্রিকায়। জাতীয় দৈনিকগুলো তাকে নিয়ে ফিচার করেছে বহুবার। কবিতায় পেয়েছেন বিশেষ সম্মাননা। ২০১৮ সালে ‘‘পার্সন অব দ্য ইয়ার” এ্যওয়ার্ড অর্জন করেন তিনি। কথা বলতে ভালোবাসেন তার চেয়ে ভালোবাসেন শুনতে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘‘কালোপুরুষ” প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। পরের বছরই দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘‘একটি স্বপ্নস্নাত নারীর জন্যে প্রার্থনা”। অতঃপর হঠাৎ করেই নির্বাসন। যখন শব্দে-ছন্দে, চিত্র-কল্পে তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেকেরই দৃষ্টি আকর্ষন করেছিলো। প্রায় এক যুগ তার কোনো লেখা ছাপাখানার বাইরে আসেনি। হঠাৎ করেই গান রচনায় মনোনিবেশ করেন। তাও প্রায় অনিয়মিত। লিখছেন বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন দিক নিয়েও। আবৃত্তি করেন। করেন গ্রন্থনা ও নির্দেশনার কাজও। কবিতায়, প্রকৃতি ও প্রেমে ছাপিয়ে গেছেন যেন সমস্তখানিতে, যেখানে শেষ পঙতিতেও তিনি কবি।