স্বার্থ চিন্তা অন্যদের ক্ষেত্রেও মূল্যমান যুক্ত করে ১৯০৪ সালে Bessie Anderson Stanley সে সময়ের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন The Brown Book এ সফলতার একটা চমকপ্রদ সংজ্ঞা দিয়েছিলেন। সংজ্ঞাটি ছিল নিম্নরূপ: ‘তিনিই সফলতা অর্জন করেন যিনি যুক্তিযুক্ত ভাবে উত্তম জীবন যাপন করেছেন। যিনি সব সময় হাসিখুশি এবং সবাইকে ভীষণ ভালোবাসেন, যিনি বিশুদ্ধ নারীর বিশ্বাসকে উপভোগ করেন, যিনি মেধাবীকে সম্মান করেন এবং শিশুদেরকে ভালোবাসেন, যিনি তার যথার্থ স্থানগুলো পূরণ করেন এবং তাঁর কাজগুলো সম্পন্ন করেন। যিনি পৃথিবীকে যেভাবে দেখেছেন তার চেয়ে উত্তম অবস্থায় রেখে যান, সেটা একটা উন্নত পোস্তদানাই হোক না কেন, একটা নির্ভুল কবিতা অথবা একটা নিষ্কৃতি পাওয়া আত্মাও হতে পারে। যার মধ্যে মাধুর্য্যময় পৃথিবীর রূপ আস্বাদনে কোনও দৈন্যতা নেই বা যিনি সেই মোহময় রূপ বর্ণনায়ও ব্যর্থ নন। যিনি সব সময় অন্যের ভেতরে সবচেয়ে ভালো দিকটাই খুঁজে বেড়ান এবং তাঁর মধ্যে সবেচেয়ে ভালো যা কিছু আছে তাই তাদেরকে দান করেন। যার জীবন হলো অন্যকে উদ্দীপ্ত করবার মত, যাঁর স্মৃতি আশীর্বাদ সূচক বাক্যের মত।’ যখন আপনি নিজেকে আপনার নিজস্ব গণ্ডির বাইরে নিয়ে আসবেন এবং অন্যের সুন্দরতম জীবন বিনির্মানে অবদান রাখবেন, তখনই আপনি সত্যিকারের জীবন যাপন করা শুরু করবেন।
প্রতিফলিত চিন্তা আপনাকে আপনার ভাবনার জগতে এনে দেবে আবেগ সংক্রান্ত অখন্ডতা আবেগঘন মূহুর্তে উত্তাপ ছড়ানোর ক্ষেত্রের খুব কম লোকেরই একটা ভালো পরিপ্রেক্ষিত থাকে। অনেক ব্যক্তিই যারা অভিজ্ঞতা থেকে রোমাঞ্চিত হন, তারা অতীতে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং প্রথমে এটাকে মূল্যায়ন না করেই তা প্রতিগ্রহণ করেন। অনুরূপ ভাবে যারা একটা চরম আঘাত মূলক অভিজ্ঞতা বহন করছেন, তারা সচরাচর যে কোন মূল্যে এ ধরনের পরিস্থিতিতে এড়িয়ে যেতে চান। যেটা কখনও কখনও কাউকে আবেগের বন্ধনে বেধে ফেলে। প্রতিফলিত চিন্তা নির্দিষ্ট ভালো বা মন্দ অভিজ্ঞতার তীব্র আবেগ থেকে আপনার নিজেকে দূরে রাখার ক্ষেত্রে আপনাকে সক্ষম করে তুলবে এবং সেগুলোকে স্বচ্ছ চোখে দেখার শক্তি যোগাবে। আপনি আপনার অতীতের রোমাঞ্চকে দেখতে পাবেন পরিপক্ক আবেগের আলোয় এবং মর্মান্তিক দুঃখ দূর্দশাগুলোকে পরীক্ষা করতে পারবেন সত্য ও যুক্তির আলোয়। এই পদ্ধতি একজন ব্যক্তিকে একগুচ্ছ নেতিবাচক আবেগের বোঝা বহন করা থেকে বাঁচাতে পারে।
আমেরিকান লেখক, বক্তা ও আধ্যাত্মিক উপদেষ্টা জন কেলভিন ম্যাক্সওয়েল এর জন্ম ১৯৪৭ সালে। তিনি মূলত নেতৃত্ব সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে লিখে থাকেন। তার নেতৃত্বের মতাদর্শ হচ্ছে, ""এভরিথিং রাইজেস এন্ড ফলস অন লিডারশিপ"", যার অর্থ, সবকিছুর উত্থান এবং পতন নির্ভর করে নেতৃত্বের উপর। নিজস্ব ওয়েবসাইটে তিনি তাঁর এই দর্শন সম্পর্কে বলেন, ""এই দর্শনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে এবং সেজন্য সর্বস্তরে নেতা তৈরি করাকে আমি আমার জীবনের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছি। আমি আপনার উপর এবং আপনার মাধ্যমে অন্যের উপর প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতার উপর বিশ্বাস রাখি। অন্যের উপর প্রভাব বিস্তার করার এই ক্ষমতার জোরে তুমি তোমার আশেপাশেই দৃঢ় নেতৃত্বের গুরুত্ব বুঝতে পারে এমন লোকেদের সমন্বয়ে নেতাদের এক বিশাল দল তৈরি করে রেখে যেতে পারবে, এই কথাটাও আমি বিশ্বাস করি।"" নিউ ইয়র্ক টাইমস এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে জন সি. ম্যাক্সওয়েল এর বই সমূহ বেস্ট সেলার উপাধিপ্রাপ্ত। তাছাড়া তাঁর রচিত Developing The Leader Within You বইটির লক্ষ লক্ষ কপি বিক্রয় হয়েছে এ পর্যন্ত। পাশাপাশি তাঁর ২৪ মিলিয়নের অধিক বই বিক্রি হয়েছে ৫০টি ভিন্ন ভাষায়। তিনি জন ম্যাক্সওয়েল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা এবং জন ম্যাক্সওয়েল টিম ও EQUIP নামক অলাভজনক সংস্থার উদ্যোক্তা, যে সংস্থাটি ১৮০টি দেশের ৫ মিলিয়নেরও বেশি তরুণকে নেতৃত্ব বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়েছে। তিনি বেড়ে উঠেছেন মিশিগানে। সেখান থেকে ওহাইও ক্রিশ্চিয়ান ইউনিভার্সিটিতে ডিভাইনিটির উপর মাস্টার্স ও মিনিস্ট্রির উপর পিএইচডি করেন। বক্তা ও লেখক হিসেবে নিজের পরিচয় দাঁড় করানোর পূর্বে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি যাজক ছিলেন। পাঠক গ্রহণযোগ্যতার দিক দিয়ে 'The 21 Irrefutable Laws of Leadership', 'লিডারশিপ ১০১: নেতৃত্বের অপরিহার্য সূত্রাবলী', 'Talent is Never Enough', 'Be all you can be', 'Relationship 101: What Every Leader Needs To know', 'How Successful People Lead', 'The Levels of Leadership', 'Good Leaders Ask Great Questions', 'Leadership Gold' ইত্যাদি জন সি. ম্যাক্সওয়েল এর বই সমগ্র, যেগুলো ছাড়াও তার আরো অনেক বই বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছে।