কি আছে বইটিতেঃ মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এবং এই সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য সেরা সব পন্থা, মাইন্ডসেট, টাকা ইনকামের রাস্তা, ফ্রিল্যান্সিং, অ্যাপভিত্তিক স্টার্টআপ, মোবাইল অ্যাপের মার্কেটিং সহ গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য রয়েছে ‘মোবাইল অ্যাপে ক্যারিয়ার’ বইটিতে। অন্য কাজের পাশাপাশি যারা ঘরে বসে কিছু বাড়তি ইনকামের কথা ভাবছেন অথবা ক্যারিয়ার হিসাবে অ্যাপ ডেভেলপমেন্টকে বেছে নিতে চান তাঁদের জন্য বইটি সার্বিক দিক নির্দেশনা হিসাবে কাজ করবে। দীর্ঘ ৯ বছরের অভিজ্ঞতা আর গবেষণায় পাওয়া তথ্য পাঠকদের সাথে ভাগাভাগি করতেই বইটি লিখেছেন এই তরুণ প্রযুক্তিবিদ জুবায়ের হোসেন। দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন উদ্যোগ আর মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর সাথে যুক্ত থেকে কিভাবে একটা অ্যাপ থেকেই কোটি টাকা কামিয়েছেন আবার কিভাবে একটা ভুলের জন্য সব শেষ হয়েছে, এসব গল্পও রয়েছে বইটিতে। হতে পারে আপনার লক্ষ্য একটা ব্যাংক জব অথবা কর্পোরেট লেভেলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই আপনি খুশি। এই বিশেষ মোবাইল অ্যাপ ডেভেলোপমেন্ট সেক্টর নিয়ে এতো মাতামাতির কি আছে? বিশ্বাস করুণ, পিছিয়ে পড়বেন। কিভাবে পিছিয়ে পড়বেন সেটাই বলছি। একটা রেস্টুরেন্ট, সুপারশপ, ব্যাংক, এনজিও, ট্রাভেল এজেন্সি অথবা যে কোন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রতিদিনই তাদের ব্যবসা প্রসারিত করছে। আর এক্ষেত্রে অনলাইন কেন্দ্রিক সেবা প্রদানে সবথেকে এগিয়ে আছে মোবাইল অ্যাপ। আপনি এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী হিসাবে যদি অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট সেক্টর নিয়ে ভালো ধারণা না রাখেন তাহলে প্রতিষ্ঠানে ভ্যালু অ্যাড করার ক্ষেত্রে পিছিয়েই থাকবেন। আর যারা এই সেক্টরকে সরাসরি ক্যারিয়ার হিসাবে জড়িয়ে নিতে চান তাদের জন্য তো কথাই নেই! ‘মোবাইল অ্যাপে ক্যারিয়ার বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে দেশের তরুণ উদ্যোক্তাদেরকে। জুবায়ের বলেন, “এ দেশে চাকরির আশায় বসে থাকা তরুণরা আজ নিজেরাই নতুন উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসা শুরু করছে। এটাই দিন বদলের শুরু। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম –আমরা খুব ভালোভাবেই বুঝে গেছি, কার আসায় বসে থাকবো আমরা? দেশটা তো আমাদেরই!”
একাধিক অ্যাপ তৈরি করে জনসাধারণের কল্যাণে কার্যকর ভূমিকা রাখা প্রতিভাবান তরুণ উদ্যোক্তা জুবায়ের হোসেন। কলেজ পালিয়ে সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে ইন্টারনেটে প্রোগ্রামিং শিখতেন জুবায়ের। মাত্র ১৬ বছর বয়সে উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা এই তরুণ প্রযুক্তিবিদ বেশ অল্প বয়েসেই সফলভাবে বাংলাদেশের আইটি সেক্টরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাঁর উদ্ভাবিত ‘ভ্যাট চেকার’ অ্যাপ দেড় বছরে বাংলাদেশ সরকারকে সাড়ে তিন’শ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল। তাঁর একটি মোবাইল অ্যাপ ‘টপ টিউব’ মাত্র দুই বছরে বিশ্বব্যাপী ২৫ লাখ ব্যবহারকারী ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া আরো অনেক উদ্ভাবনী কাজের মাধ্যমে দেশব্যাপী সাড়া ফেলে দিয়েছেন এই তরুণ নির্মাতা। জুবায়ের হোসেন তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে অর্জন করেছেন জাতীয় মোবাইল অ্যাপস অ্যাওয়ার্ড, দক্ষিণ এশিয়ার সেরা উদ্যোক্তা সম্মাননা, ব্র্যাক আয়োজিত মন্থন ডিজিটাল ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড, আইসিটি এপিকটা অ্যাওয়ার্ড,ভিয়েনাতে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড সামিট অ্যাওয়ার্ড সহ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা। প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘জুবায়ের অ্যাপ একাডেমি’ যার মাধ্যমে তরুণদের আইটিতে ক্যারিয়ার গড়তে দিক নির্দেশনা এবং অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছেন গত তিন বছর ধরে। জুবায়ের হোসেন এর জন্ম ১৯৯৪ সালের ২২ জুন, গোপালগঞ্জ এর মুকসুদপুর থানার সালিনাবক্সা গ্রামে। স্কুল শেষ করেন খুলনা পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে। ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ থেকে এইসএসসি পাস করার পর পড়াশুনা করেছেন মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এ্যান্ড টেকনোলজি তে। যদিও জুবায়ের এর পড়াশুনা বিমান প্রকৌশল নিয়ে, তিনি পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট। জুবায়ের বিশ্বাস করেন, তরুণদের কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তাই তিনি একাই নন বরং সব তরুণদের নিয়ে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন।