এই সময়ের সংবেদী রূপকার, শক্তিমান কথাশিল্পী আহমাদ মোস্তফা কামাল তাঁর অনুপম-সজীব-নির্বিকল্প গদ্যে রচনা করলেন ভিন্নমাত্রিক ব্যঞ্জনার নতুন ধরনের এই গ্রন্থটি। নতুন ধরনের মানে? লেখাগুলো সম্পর্কে তিনি নিজেই লিখেছেন এই গ্রন্থের ভ‚মিকায় ‘গল্প নয়, যদিও গল্পের ঢঙেই লেখা; উপন্যাসও নয়, যদিও উপন্যাসের অনেক উপকরণ পাওয়া যাবে; প্রবন্ধও নয়, যদিও গঠনশৈলী দেখে সেটি মনে হতে পারে। খানিকটা ব্যক্তিগত আলাপচারিতার ভঙ্গিতে রচিত এই লেখাগুলোকে মুক্তগদ্য নামে ডাকতেই ভালোবাসি আমি।’ হ্যাঁ, খুব পরিচিত নয় এই ধরনের লেখা আমাদের পাঠকদের কাছে, তবু তিনি ঝুঁকি নিলেন, অচেনা ভঙ্গির এই লেখাগুলোকে মলাটবন্দি করলেন পাঠকদের জন্য। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন, তাঁর পাঠকসংখ্যা সীমিত হলেও তাঁরা সবাই সংবেদনশীল এবং গভীরমনস্ক। আর পাঠকরা তো জানেনই ‘অনেকটা মুখোমুখি বসে কথা বলার মতো করে গল্প বলেন তিনি, এবং সেই বলার মধ্যে কোনো ফাঁকি থাকে না। এ যেন পুরনো কোনো বন্ধুর সঙ্গে দক্ষিণমুখো বারান্দায় বসে আত্মগত গলায় স্মৃতিচারণের মতো।’ হ্যাঁ, এই গ্রন্থেও জাাদুবিস্তারি-আত্মমগ্ন বর্ণনায় তিনি সাজিয়েছেন জীবনের নিভৃত মুহূর্তগুলো; আমরা তার গন্ধ পাই, আলো পাই, শব্দ শুনি। আসুন, প্রিয় পাঠক, আমরাও তাঁর সঙ্গে এই জীবন অবলোকন করি।
Ahmad Mostofa kamal, জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। পড়াশোনা করেছেন পাটগ্রাম হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি, এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচ.ডি। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ কর্মরত। কিন্তু যাবতীয় বৈষয়িক সাফল্যের সম্ভাবনাকে নাকচ করে শুধুমাত্র লেখালেখিকেই তিনি জীবনের সকল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। লেখালেখির শুরু ’৯০ দশকের গোড়া থেকেই। প্রথম গল্পগ্রন্থ দ্বিতীয় মানুষ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর আরো সাতটি গল্পগ্রন্থ, ছ’টি উপন্যাস এবং চারটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেরিয়েছে। এটি তাঁর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য লাভ করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩’ পুরস্কার। দ্বিতীয় উপন্যাস অন্ধ জাদুকর ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’ ২০০৯-এ, এবং তৃতীয় উপন্যাস কান্নাপর্ব ২০১২ সালের শ্র্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ২০১৩।