"ধর্মের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ এটি মূলত রিচার্ড হলােওয়ের ‘এ লিটল হিস্ট্রি অব রেলিজিয়ন' বইটির বাংলা অনুবাদ। ধর্মতত্ত্বে দীক্ষিত ও এডিনবরা এপিসকোপাল চার্চের প্রাক্তন বিশপ রিচার্ড হলােওয়ে সতর্ক গুরুত্ব বণ্টন আর পরিশীলিত ভারসাম্যময় বাক্য ব্যবহারে পৃথিবীর ধর্মগুলাের আকর্ষণীয় একটি ইতিহাস রচনা করেছেন। এই সংক্ষিপ্ত ইতিহাসে যখন বিশ্বব্যাপী বহু হাজার বছরের পরিক্রমায় ধর্মের উত্থান আর (কখনাে) পতনের মানচিত্রটি তিনি এঁকেছেন, এর সমান্তরালে তিনি সেই মানব পরিস্থিতি আর মানসিকতারও অনুসন্ধান করেছেন, যা ধর্মের জন্য মানুষের তীব্র আকাঙ্ক্ষাটিকে প্ররােচিত করেছিল- একটি প্রজাতি হিসাবে আমরা কোথা থেকে এসেছি, এই অকল্পনীয় বিশাল মহাবিশ্বে আমাদের অবস্থান কী, পাশাপাশি একা হবার ভয়টিও সম্ভবত আমাদের আবেগকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়ে যায়। খুব সরলতম বাক্যে যদি সংক্ষেপিত করা হয়, তাহলে বলা যায়, কিছু আচার আর বিশ্বাসকে ঘিরে সমাজ গঠনে কিংবা একজন চূড়ান্ত ন্যায়বিচারকের অস্তিত্ব আছে এমন সান্ত্বনায় অথবা এই জীবনের পরে অন্য একটি জীবনের কল্পনায় ধর্ম আমাদের আশার ক্ষুধা মেটায়। এই ইতিহাসটির সূচনা ১৩০,০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে- যখন আমাদের পূর্বসূরিদের সমাহিত করার আচারে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রমাণ মিলেছিল। আমাদের সময়ে এই বইটির যদি কোনাে বার্তা থেকে থাকে, তবে সেটি এসেছিল যখন হলােওয়ে উল্লেখ করেছিলেন, ধর্মের টিকে থাকার অসাধারণ একটি প্রবৃত্তি আছে, তিনি লিখেছেন, এটি সেই কামারের নেহাই যা বহু হাতুড়ি ক্ষয় করেছে। সুতরাং এই ধারণার ভিত্তিতে বলা যায়, আমাদের পূর্বপরিজ্ঞেয় ভবিষ্যতে এটি তার অস্তিত্ব ধরে রাখবে; আর তাদের সম্বন্ধে আরাে কিছু জানতে এই আলােকিত বইটির পাতার মত আর কোনাে উত্তম জায়গা নেই।