ক্রিস্টিয়ানা বেকার ১৯৬৫ সালে জার্মানির হামবুর্গে জন্মগ্রহণ করেন। তারুণ্যের শুরুতেই এমটিভি ইউরোপের শীর্ষস্থানীয় উপস্থাপিকা হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। এমটিভিতে থাকাকালীন তিনি ইউরোপের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন। টেলিভিশন ক্যারিয়ারে দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রিস্টিয়ানা জার্মানির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টেলিভিশন অ্যাওয়ার্ড ‘গোল্ডেন ক্যামেরা’ লাভ করেন। ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে থাকাকালে ঘটনাক্রমে লন্ডনে তার পরিচয় হয় ক্রিকেট তারকা ইমরান খানের (বর্তমানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী) সাথে। ইমরানের নেতৃত্বে পাকিস্তান ক্রিকেট টিম তখন সদ্য বিশ্বকাপ জয় (১৯৯২) করেছে। তার আমন্ত্রণে ক্রিস্টিয়ানা প্রথমবারের মতো পাকিস্তান ভ্রমণে যান। সেখানকার অনাবিল প্রকৃতি এবং ইমরান খান ও কিছু মানুষের হৃদয়গহিনে থাকা আল্লাহপ্রেম দেখে তিনি অভিভূত হন। ইমরান খানের আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও ইসলামের কালজয়ী আদর্শ উভয়ের প্রেমে পড়ে যান তিনি। লন্ডনে ফেরার পর তিনি ইসলাম সম্পর্কে গভীরভাবে জানার চেষ্টা করেন। তিনি যখন ইসলামকে জানার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন, তখনই হঠাৎ ইমরানের সাথে তার বিচ্ছেদ ঘটে। এ ঘটনায় ক্রিস্টিয়ানা বেশ মর্মাহত হন। কিন্তু ইমরানের সাথে বিচ্ছেদ ঘটলেও ইসলামের সাথে তার সর্ম্পক হয় আরও দৃঢ়। তিনি ইসলামকে কাছ থেকে বোঝার চেষ্টা অব্যাহত রাখেন এবং অবশেষে ইসলামের সুশীতল ছায়ায় আশ্রয় নেন। ক্রিস্টিয়ানার ইসলাম গ্রহণের পরের জীবন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ক্যারিয়ার, বৈবাহিক ও পারিবারিক জীবন সবক্ষেত্রে একের পর এক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে থাকেন। ইউরোপের কিছু মানুষের ইসলামোফোবিয়ারও শিকার হন তিনি। কিন্তু কোনো কিছুই তাকে ইসলাম থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি। বরং ঝড় যত প্রবলভাবে তার উপর আছড়ে পড়েছে, তিনি তত প্রবলভাবে ইসলামকে আঁকড়ে ধরেছেন। ফ্রম এমটিভি টু মক্কা লেখিকার সেই ঘটনাবহুল ও সংগ্রামী জীবনের উপাখ্যান। বইটি প্রথমে প্রকাশিত হয় জার্মান ভাষায়। পরে ইংরেজি, ডাচ ও আরবি ভাষায় অনূদিত হয়ে বিপুল পাঠকনন্দিত হয়।