"প্যাকেট নিয়ে পাগলামি" বইয়ের ফ্ল্যাপের অংশ: ‘প্যাকেট নিয়ে পাগলামি' উপন্যাসে মােস্তফা মামুন তেমন জটাজালই বিস্তার করেছেন। যেখানে জ্ঞানপাপী ও অর্থলােভী শিক্ষক, অযােগ্য জনপ্রতিনিধি, চোর, ভণ্ডের সাথে উঠবস করতে দেখা যায় সরলপ্রাণ এক শিক্ষককে। ব্যক্তিজীবনে যিনি সুখী একজন মানুষ, যার অনেক কিছু থেকেও নেই। আছে কেবল নিজস্ব একটা জগৎ। সে জগৎ কেমন? উঁকি দেয় যাক তবে উপন্যাসের চিত্রপটে ‘ঘরে ফিরেও তিনি মৃত চরিত্রে অভিনয় করে যেতে থাকলেন। পুরােনাে আমলের ঘর, ঘরের সমান বয়সী তালা, না মারলেও চলে, সামান্য ধাক্কাতেই খুলে যায়। তবু তালা বদলাননি, কারণ প্রায়ই তিনি চাবি হারিয়ে ফেলেন। আজ অবশ্য চাবিটা পাওয়া গেল । দরজা খুলে নিজের ঘরটাকেও নতুন নতুন মনে হতে থাকল। ১৯৮১ সালে মাত্র পঞ্চান্ন টাকায় কেনা একটা খাট, পরের বছর জোগাড় করা জাম কাঠের আলমারি এবং টেবিল-সব মিলিয়ে তার শ’ দেড়েক টাকার সংসার। কিছু বই আছে। বইয়ের সঙ্গে আছে উইপােকা-তেলাপােকা-ইদুর-বিড়াল। | এমন উপস্থাপনার পর মােস্তফা মামুন উপন্যাসের মােড় ঘুরিয়ে দেন একটি রহস্যমণ্ডিত প্যাকেট নিয়ে। যে প্যাকেট চুম্বকের মতাে টানতে থাকে গ্রামবাসীকে। সে প্যাকেট যে জাদুময় পরিবেশ সৃষ্টি করে, তার আকর্ষণে পতঙ্গের মতাে ছুটে আসে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা; আসে কর্মজীবী শহরাঞ্চলের মানুষও; নাওয়া-খাওয়া-কাজ সব ভুলে; অন্ধের মতাে। কেবল একজন ব্যক্তি নীরব দর্শকের ভূমিকায় অবলােকন করেন মানুষগুলাের পাগলামি। অন্যদের মতাে কোনাে আকর্ষণ তাকে টানে না। টলাতে পারে না কোনাে লােভ-লালসাও। তিনি সেই মানুষ, যে মানুষটির শ’ দেড়েক টাকার সংসার, যার কাছে ছিল রহস্যমণ্ডিত সেই প্যাকেটটি। অথচ তার প্রতি তাঁর কোনাে আকর্ষণ নেই। বরং অন্যরা যখন লােভাতুর হয়ে প্রতিযােগিতায় লিপ্ত, তখন তিনি অদূরে দাঁড়িয়ে রহস্যময় হাসি হাসেন। কেন? তার সে হাসির পেছনে প্যাকেটের মতাে কোন রহস্য লুকিয়ে? কিসের শক্তিতেই বা তিনি নিজকে নিবৃত্ত রাখেন সে লােভ থেকে? লেখক সে রহস্যও উন্মােচন করেছেন উপন্যাসের পাতায় পাতায়; যা অনুরণিত হয় আপনাতে, আপন লয়ে
Mustafa Mamun বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয় ছিল আইন। কিন্তু আইনজীবী আর হওয়া হয়নি। এমন আরো অনেক না হওয়ার ভিড় পেরিয়ে যতসামান্য যা হয়েছে তার পুরোটাই লেখালেখিকেন্দ্রিক। লেখক এবং সাংবাদিক, আপাতত এটাই নামের পাশের পরিচয় । জন্ম মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায়। তারপর সিলেট ক্যাডেট কলেজের রোমাঞ্চকর জীবন। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সম্মান প্রথম বর্ষ থেকেই ক্রীড়া সাংবাদিকতা নামের দারুণ আনন্দময় এক পেশায় জড়িয়ে পড়া। খেলা দেখতে আর লিখতে ভ্ৰমণ করা হয়ে গেছে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, স্পেন, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, দেশ। বন্ধু-আডডা-মানুষ এসব নিয়ে মেতে থাকতে ভালো লাগে। বই পড়া, খেলা দেখাও আছে পছন্দের তালিকায়। কিন্তু সব ছাপিয়ে শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে পছন্দের কাজ লেখা। এই নিয়ে চলছে জীবন। ভালোই তো চলছে!