নিজে স্বপ্ন দেখি ও তরুণদের স্বপ্ন দেখাই- এটা আমার সামাজিক দায়বদ্ধতা যা আমি কোনাে প্রকার পারিশ্রমিক ছাড়া করি এবং প্রতিদিন ২-৩ ঘণ্টা সময় ব্যয় করি এই কাজে। প্রায় অসম্ভব একটি স্বপ্ন আজ সারা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার ও ৫০টি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশী সহ ২০০,০০০ তরুণ-তরুণীদের মাঝে ছড়িয়ে গেলাে। গত ৭৩০ দিন ধরে ৮টি ব্যাচের মাধ্যমে চলেছে আমাদের এই অনলাইন কর্মশালা। একদিনের জন্যও আমাদের এই কর্মশালা বন্ধ ছিল না, শুক্রবার, শনিবার, সরকারি ছুটি এমনকি ঈদের দিনও আমরা সেশান করেছি। এটা সারা বিশ্বে একটি ইতিহাস- এত লম্বা এবং টানা ৯০ দিনের কোনাে কর্মশালা পৃথিবীতে কেউ কোনােদিন করেনি। আমরা শুধু স্বপ্ন দেখাইনি, কিভাবে স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হয় তা শিখিয়েছি টানা ৯০ দিন ধরে এক একটি ব্যাচে। ৯০ দিন ধরে আমি শুধু উদ্যোক্তা হবার সকল কলা-কৌশল শিখাইনি, শিখিয়েছি কিভাবে একজন ভালােমানুষ হয়ে বুক ফুলিয়ে বেঁচে থাকতে হয়, কিভাবে সমাজের জন্য ও দেশের জন্য কাজ করতে হয় এবং সফল হতে হলে দরকার মা-বাবার দোয়া। আমাদের লক্ষ আগামী ১ বছরের মধ্যে ১০০,০০০ মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করা অন্তত ৫০০০ উদ্যোক্তা হওয়ার মধ্য দিয়ে- “চাকরি করবাে না চাকরি দেব”। প্রায় ২০০০ জন উদ্যোক্তা হবার জন্য ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছেন। যারা বিজনেস বন্ধ করে দিয়েছিলেন তারা আবার শুরু করেছেন, যারা আগে শুরু করা বিজনেসে ভালাে করছিলেন না তারা এখন আলাের মুখ দেখতে শুরু করেছেন এবং অনেকে ভেবেছিলেন জীবনের চাকরি করা ছাড়া তাকে দিয়ে। আর কিছু সম্ভব নয়, তিনিও চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা হবার কথা ভাবছেন, কেউ কেউ শুরু করে দিয়েছেন। যারা স্বপ্ন দেখেন নিজে কিছু একটা করতে চান, পরিশ্রম করতে চান, যাদের কোনাে তাড়াহুড়া নাই ও নিজের জীবনটাকে বদলে দিতে চান- আমরা শুধুমাত্র তাদেরকে নিয়ে কাজ করছি। আমাদের সাথে কাজ শেখার জন্য সবচেয়ে বড় যােগ্যতা হলাে- আপনি একজন ভালােমানুষ। পুরাে কার্যক্রমটা হচ্ছে অনলাইনে প্রতিদিন। পুরাে প্রকল্পটি করা হচ্ছে ‘বিনা ফি”-তে অর্থাৎ প্রশিক্ষণার্থীদের থেকে কোনাে টাকা দেয়া লাগছে না। যেহেতু এটা আমার সামাজিক কাজের অংশ।
একজন উদ্যোক্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মেন্টর, ইন্সপিরেশানাল স্পিকার, নিউজ প্রেজেন্টার ও বিজনেস প্রোগ্রাম অ্যাংকর। জন্মস্থান ফেনীর ফুলগাজিতে । তিনি চার্টার্ড আকাউনটেন্সি (ইন্টার), এমকম ও এমবিএ করেন। ইন্টারনেট কোম্পানিতে চাকরি দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু করেন। এক সময় সেই রকম বিশাল একটি ইন্টারনেট কোম্পানির মালিক হন তিনি। চাকরি জীবনেও অত্যন্ত সফল ইকবাল বাহার খুব অল্প বয়সে একটি মাল্টিনেশানাল। কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার হন। মাল্টিনেশানাল কোম্পানির লোভনীয় চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়ে চাকরি করবো না চাকরি দেব’ এই দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেন নিজের কোম্পানিতে। উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন চাকরি জীবনের শুরুতেই। উদ্যোক্তা হয়ে উঠার গল্পটা এত সহজ ছিল না। ছিল ব্যাপক বাধা, অনিশ্চয়তা ও হেরে যাবার সম্ভাবনা। কিন্তু তিনি ছিলেন দৃঢ়চেতা ও ব্যাপক লেগে থাকা একজন স্বপ্নবাজ মানুষ। আজ তিনি অপ্টিমেক্স কমিউনিকেশন লিমিটেড ও আলাদীন ডট কম নামক দুটি কোম্পানির ম্যানেজিং ডিরেক্টর। সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য মেধাবী তরুণদের কর্মসংস্থান। এখানেই থেমে থাকেননি ইকবাল বাহার, নেমেছেন বাংলাদেশের ৬৪ জেলার হাজার হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি না খুঁজে উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন দেখাতে। শুধু স্বপ্নই নয়, সেই স্বপ্ন কীভাবে বাস্তবায়ন করতে হয় তার লক্ষ্যে শুরু করেছেন এক বিশাল কর্মযজ্ঞ উদ্যোক্তা তৈরির অনলাইনে কর্মশালা এবং তা বিনা মূল্যে । ইতিমধ্যে ৬০০০ জন তরুণ-তরুণীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন গত ১৮০ দিন ধরে, প্রতিদিন। যাতে সবাই একজন ভালো মানুষ হয়ে নিজের বলার মতো একটা গল্প’ তৈরি করতে পারে।