‘মা’ শব্দটি শুনলে সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়ে। জন্ম থেকে মানুষ সাধারণত মায়ের কাছেই বেড়ে ওঠে। মায়ের স্নেহ ভালোবাসা মায়া মমতা নিয়ে একটি শিশু ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে শারীরিক ও মানসিকভাবে। মায়ের কোনো বিকল্প হয় না। মায়ের জন্য সন্তানেরা সবকিছু করতে পারে। ধর্মীয়, সামাজিক কিংবা পারিবারিক যেকোন স্থানেই মায়ের সম্মান সর্বোচ্চ। যার যার মা তার তার কাছে সেরা। মাকে নিয়ে শিল্প সাহিত্য জগতে অসংখ্য গান, কবিতা, উপন্যাস, গল্প, নাটক, শিল্পকলা, সিনেমা তৈরি হয়েছে। তবু যেন মায়ের আবেদন ফুরায় না। তবুও মায়ের প্রকৃত রূপ যেন উন্মোচিত হয় না। হাইউল রশিদ ফকির এর লেখা ‘মা মাগো!’ একটি কাব্যগ্রন্থ। মায়ের বন্দনা, মায়ের স্মৃতি, মায়ের ত্যাগ, মায়ের মহিমাই প্রকাশ পেয়েছে এ বইটিতে। তিনি ‘মা মাগো!’ কবিতায় লিখেন― আমার মায়ের বুকটা ফেটে চৌচির হতো সাত সাতটি সন্তানের জন্য। মা! মাগো এই আমরা তোমায় হারিয়ে কাঁদছি পৃথিবীটা অন্ধকার শূণ্য! মা! মাগো! হাজার মানুষ চারপাশে! হাজার রকম মুখ! হাজার কথা কয়! কারো কথায় পাই না খুঁজে ঠিক তোমার আদর মাখা মুখের পরিচয়! সন্তানের আর মায়ের বয়সের ব্যবধান কিংবা অকালে মায়ের মৃত্যুতে সন্তানেরা হয়ে পড়ে শোকে কাতর। মাতৃহারা সন্তানেরা মায়ের শূন্যতাকে সব সময়ই অনুভব করে। তাদের হাসি আনন্দ শোকে দুঃখে মায়ের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে সব সময়। মাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি সন্তানই চায় তার সাফল্য। মায়ের স্বপ্ন আশা পূরণে সন্তানেরা সদাই থাকে তৎপর। মাও চায় তার সন্তান হয়ে উঠুক মানুষের মতো মানুষ। সকল অমঙ্গল থেকে মা তার সন্তানকে দূরে রাখে। মা যেন একটি বট বৃক্ষের মত― ‘যে মাটিতে বৃক্ষের জন্ম সে মাটির মৃত্যুতে বৃক্ষ প্রাণহীন নিষ্প্রাণ ম্লান ধূসর নির্বাক নিথর পাথর স্রোতের আঘাতে সাগরে ভাসমান অসহায় শেওলার মতন অস্থির আমি কূলহীন সমুদ্রে ভেসে বেড়াই স্নেহহীন।’ মা ও সন্তান-পৃষ্ঠা-৮ সন্তান সে যতো বড়ই হোক না কেন মায়ের কাছে সেই খোকাটিই থেকে যায়। পৃথিবীতে যার মা থাকে তার আর কোনো বড় সম্পদ দরকার হয় না। কিন্তু মাতো কারো চিরদিন বেঁচে থাকে না। কেউ মাকে হারায় শৈশবে কেউ এসে হারিয়ে ফেলে বার্ধক্যে। মাতৃভক্তি আর মাতৃপ্রেমের যে গভীর নিবেদন তা এই বইয়ের কবিতাগুলোর মধ্যে মজুদ আছে। এছাড়াও আছে অন্য অন্য বিষয় নিয়ে বেশ কিছু কবিতা। পাঠক এই কবিতাগুলোর অংশ হতে পারবেন অনায়াসে।