সদ্য জন্ম নেওয়া মানব শিশুরা অনেক আনন্দের মাঝে অনেকের আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নিশ্বাস নিতে শুরু করে। কিন্তু নিয়তি মাঝেমাঝে গোপনে অট্টহাসি দিয়ে অসুরের ঝংকারে মানুষের চলার পথ থমকে দেয়। তবে মানুষ এতো শক্তিধর প্রাণি যে, নিঃশেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত নিজেকে টিকিয়ে রাখার লড়াইয়ে নির্দ্বিধায় নেমে পড়ে। এদের কেউ কেউ বীরের মতো জিতেও যায় আবার হেরেও যায় গভীর আত্মবিশ্বাস নিয়ে। সেই সঙ্গে প্রতিনিয়ত মানুষে মানুষে জন্মসূত্রে বা সামাজিকভাবে যেসব সম্পর্ক তৈরি হয়, সেসব দুমড়েমুচড়ে গেলেও নতুন করে বাঁচার শক্তি অর্জনের চেষ্টা করে মানুষ। এই বইয়ে সংকলিত চৌদ্দটি গল্পে এসব বিষয় স্থান পেয়েছে। কোনো মানুষকে চ‚ড়ান্তভাবে দোষী বা পাপী বানানোর সিদ্ধান্ত অন্য কোনো মানুষ খুব সহজেই নিতে পারে না। কারণ প্রতিটি ঘটনার পেছনেই কোনো না কোনো যৌক্তিক কারণ থাকেÑএটাই আমাদের বিশ্বাস করতে হবে। হোক সেটা ইতিবাচক অথবা নেতিবাচক। বিভিন্ন সম্পর্কের মাঝে ভালবাসা কিংবা স্বার্থপরতার বিকাশ, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের চিরায়ত কষ্ট, প্রবাসে নারী কর্মীদের মৃত্যু, সন্তান আর পিতামাতার মধ্যকার আত্মিক সম্পর্ক, সামাজিক নিরাপত্তাহীনতার শিকার কিশোর-কিশোরীদের হারিয়ে যাওয়া বা রাস্তায় পড়ে থাকা পাগলটিও যে মানুষ...এমন সব বিষয়ই বইয়ের গল্পগুলোতে ঘুরেফিরে এসেছে। নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে পাথরের নদীর মতোন প্রতিক্রিয়াহীন এই জীবনে গল্পগুলো শুধু গল্প হয়েই থেকে যাচ্ছে, সমাধান আসছে না। আর বইয়ের পাতাগুলো পুরোনো হচ্ছে, মাকড়সার জাল জড়িয়ে ধরছে বুকসেলফের তাক, তবুও লেখার ইচ্ছের নির্বাণ হচ্ছে না।