নারীর প্রতি শিল্পীর অগাধ আগ্রহ। সাহিত্যে নারীর রূপের চমত্তার সব বর্ণনা পাই, পুরুষের দেহ সৌষ্ঠবের বর্ণনা কই? অন্যান্য কলামাধ্যমেও তাই। যাপিত জীবনে নারীশরীর নিয়ে যত আগ্রহ তেমনটা পুরুষের বেলায় নেই। তাই সুন্দরী প্রতিযােগিতার ব্যাপক প্রসার, সুদর্শন প্রতিযােগিতার খবরই পাই না। নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যখন গর্ব হয়ে উঠতে চেয়েছে তখন তা কেটে নেয়া হয়েছে। জীবনহানির কারণ হিসেবে চিহ্নিত অঙ্গ ফেলে না দিতে পারার দরুনও নারীকে জীবন দিতে হয়েছে। বহুকাল ধরে নারী তার শারীরিক গঠনের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছে। তদ্রুপ নারীর নিরাপত্তাহীনতা ঘরে-বাইরে সর্বত্র ) বহুগামী পুরুষকে গালি দেবার জন্যও বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হয়। নারীবাচক শব্দ। যে অপরাধে নারীর চরিত্র নিয়ে কথা ওঠে তা পুরুষের বেলায় বুক ফুলিয়ে বলার মতাে বিষয়। কখনও কখনও শিল্পীরা নির্দয়ভাবে নারীচরিত্র চিত্রায়ণ করেছেন কারণ, নির্দয় না হওয়া পর্যন্ত শিল্পী উৎকর্ষের চূড়ান্তে পৌঁছে না। যে কাঁদছে শিল্পী তাকে আরও কাঁদায়। যে বেঁচে যেতে পারতাে তাকে প্ররােচিত করে। আত্মহত্যায় । লজ্জা অপমানে জর্জরিত যে মানুষ আত্মহত্যা করে মুক্তি পেতে পারতাে তাকে বাঁচতে বাধ্য করে। যে কেঁদে হালকা হতে পারতাে তাকে হাসায়। শােকগ্রস্ত মানুষকে হাসানাে কি কম নির্দয়তা!' নারীজনম-এর নারী চরিত্রগুলাে অনুধাবন করার চেষ্টা করছে নিজেদের সম্পর্কে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গি। গল্পটি বলার জন্য লেখক নিজের চোখে জুড়ে নিয়েছেন নারীচোখ। আপনি যে কোনাে চোখে খুঁজুন, নিজেকে কিংবা নিজের পরিচিত কোনাে নারীর অবয়বও পেয়ে যেতে পারেন চরিত্রগুলাের মধ্যে।