কালাে মেয়ে কাজল। জন্ম থেকেই গায়ের রং নিয়ে শুনে আসছে নানা রকম নেতিবাচক কথা। ইন্টারমিডিয়েট পড়া পর্যন্ত বিষয়টা নিয়ে তার খুবই মনােবেদনা ছিল। অনার্সে উঠার পর সে বুঝতে পারে- এটা আসলে ব্যক্তিগত কোন সমস্যাই নয়। এটা একটা সামাজিক সমস্যা। এটা এক ধরনের হীনমন্যতার পরিচায়ক। এটাও এক ধরনের বর্ণবাদ। যারা গায়ের রং কালাে নিয়ে বর্ণবৈষম্য করে এক সময় সে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় আরাে কিছু গায়ের রং কালাে মেয়েদের নিয়ে। সে মনে করে- গায়ের রংয়ে মানুষকে কখনােই বিচার করা উচিত নয়। মানুষকে বিচার করা উচিত তার কর্মে, মেধায়, মননে, জ্ঞানে-ধ্যানে। একটা সময় সে ভুলে যায় যে সে কালাে। আর এই কালাে মেয়েটিরই প্রেমে পড়ে তারই শিক্ষক কলেজের তরুণ প্রভাষক সিয়াম চৌধুরী। বছর দুয়েক কাজলকে লক্ষ্য করার পর সিয়াম কাজলকে প্রেম নিবেদন করে। নায়কোচিত সিয়ামের সাথে কাজলের মানাবে না। সিয়ামের পরিবার, সিয়ামের সমাজ তাকে মানবে না। সিয়াম কাজলকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে কাজল সবিনয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে। কাজল তাকে বিয়ে না করার সিদ্ধান্তে পাহাড়ের মতাে অটল। ওদিকে সিয়ামও কাজলের জন্য মজনু হয়ে কুকুরকে চুমু খেতে রাজী, ফরহাদ হয়ে পাহাড় কেটে পানি আনতে রাজী, ইউসুফ হয়ে বারাে বছর বড়শি বাইতে রাজী। এরকমই যখন অবস্থা তখন কাজলও রাজী হয়ে যায়। তবে শর্ত একটা বছর সিয়ামকে অপেক্ষা করতে হবে। এই সময়েই যাচাই হবে সিয়ামের প্রেম। কাজল সিয়ামের সাথে তার মা-বাবা, বােনসহ আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে পরিচিত হতে যেতে থাকে সুকৌশলে । কাজলের মায়ের কথায় সে বুঝতে পারে সে যদি সিয়ামকে বিয়ে করে তাহলে সিয়ামকে তার আভিজাত্যপূর্ণ পরিবার, সমাজ ত্যাগ করতে হবে। কাজল কখনােই চায় না তার কারণে সিয়াম তার পরিবার হতে সমাজ হতে বিচ্ছিন্ন হােক। তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে সে সিয়ামকে প্রত্যাখ্যানই করে। আর এই প্রত্যাখ্যান সইতে না পেরে গাড়ি চালিয়ে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় সিয়াম। সে কাজলের সাথে শেষ দেখা করে ঝড়াে গতিতে গাড়ি চালাতে থাকে যাতে সবাই বুঝে সিয়াম কার এক্সিডেন্টে মারা গেছে।