‘রানি ভিক্টোরিয়া ও করিম কাহিনি’ নির্বাচিত কলাম সংকলন হলেও লেখকের ঝরঝরে গদ্য ও বিষয় বৈচিত্র্যের কারণে সুখপাঠ্য। ইতিহাস-ঐতিহ্য থেকে শুরু করে সমকালীন বাংলাদেশ, বিশ্ব পরিস্থিতি, রাজনীতির চালচিত্রসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে তাঁর লেখনীতে। সাংবাদিকতায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁর লেখনীকে করেছে ঋদ্ধ। তিনি পাঠকের কাছে রানি ভিক্টোরিয়ার গোপন প্রেম আবদুল করিমকে যেমন তুলে এনেছেন, তেমনি রাজনীতির সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন সাগরিকা সিনেমায় উত্তম সুচিত্রার চিঠি চালাচালির গল্প। রতন টাটা আর অমিতাভের শিউরে ওঠার মতো গল্প যেমন লিখেছেন তেমনি চুলচেরা বিশ্লেষণে পথ দেখানোর চেষ্টা করেছেন আওয়ামী লীগ-বিএনপির মতো রাজনৈতিক পরাশক্তিদের। তাঁর লেখায় জীবন্ত হয়ে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী সার্কাস কিংবা মুঘল খানদানের বিখ্যাত শাহজাদা সেলিমের বর্ণিল জীবন। লেখার উপজীব্য হয়েছে সাড়াজাগানো চিত্রতারকা সুচিত্রা ও মধুবালা থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধীর সুকৃতি, ভেজাল রাজনীতি, ওয়াসার পানি সংকট, শেয়ার বাজার লুটেরা, রাজনৈতিক গডফাদারদের কুকীর্তির মতো বিচিত্র সব বিষয়। নঈম নিজাম প্রমাণ করেছেন গল্পের ছলে বর্ণিত বিষয়ে কলাম করে তোলা সম্ভব এবং সেই কলাম পঠনে পাঠকচিত্ত আলোড়িতও হয়।
Naem Nizam নঈম নিজাম বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় একটি উজ্জ্বল নাম। এ দেশের টিভি মিডিয়াকে যারা সফল করে তুলেছেন তাদের একজন তিনি। গত শতকের আশির দশকের শেষে এবং নব্বই দশকে ছিলেন রাজনৈতিক প্রতিবেদক । কাজ করেছেন "আজকের কাগজ’, ‘ভোরের কাগজ সহ কয়েকটি দৈনিকে । চালু করেন একটি সংবাদ সংস্থা। টিভি এবং প্রিন্ট উভয় গণমাধ্যমে তার সর্বোচ্চ সফলতা । ‘এটিএন বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা বার্তা সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকালে অনেক সৃষ্টিতে যোদ্ধার মতো অবদান তাঁর। পেশাগত জীবনে সফল অবস্থান থেকে ২০০৬ সালে ব্যবস্থাপনা সম্পাদকের দায়িত্ব নেন ‘এসটিভি ইউএস’র। ফখরুদ্দীন, মইন-ইউর সরকার এই চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়। বর্তমানে বাংলাদেশ প্রতিদিন'-এর সম্পাদক। তাঁর নেতৃত্বে এ পত্রিকা দেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক। নতুন সৃষ্টি ও পরিকল্পনায় তাঁর আনন্দ । জীবনের বড় সাফল্য প্রিন্ট এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় অনেক সাংবাদিক সৃষ্টি। টেলিভিশন মিডিয়া চালাতে গিয়ে মনে হয়েছে, এই মিডিয়ার জন্য আরও অনেক কিছু করার আছে।