লেখকের বিষয়, ভাষা ও স্টাইল নিঃসন্দেহে দক্ষ গল্পকারের পরিচয়ই দেয়। ... অত্যন্ত মনোগ্রাহী ও শিল্প সম্মত ও রাসোত্তীর্ণ। ভাষা অত্যন্ত চমৎকার এবং উঁচু মানের। -সাহিত্যিক রিজিয়া রহমান।/ লেখ গল্পের উপাদান হিসেবে ছুঁয়ে গেছেন সবকিছুই, যা বাংলাদেশের মানুষ সব সময় দেখছেন এবং যা থেকে বেরিয়ে আশার প্রত্যাশা করছেন। ... পাঠককে বিরতি না দিয়ে এক-বসায় শেষ করতে প্রলুব্ধ করবে লেখকের নিজস্ব তাষাশৈলীর আকর্ষণ এবং গল্পের রস। -মুহম্মদ ফজলুর রহমান, সম্পাদক, ঠিকানা, নিই ইয়ক।/ মোমিনুল হকের লেখায় রয়েছে আধুনিকতা, গভীরতা, জীবনবোধ, সমাজচেতনতা। তাঁর লেখা পড়ে আপ্লুত হতে হয়। ... এই ধারণার সৃষ্টি হয় যে বাংলাদেশের জীবনকে দেখার অভিজ্ঞা তাঁর অত্যন্ত ঘণিষ্ট। -মনজুর আহমেদ, সাহিত্য সমালোচক ও লেখক।/ প্রত্যেকটি গল্প বর্ণনাত্মক ভঙ্গিতে শুরু করে আশ্চর্যরকমভাবে বিস্ময়ের মধ্যে রেখে, বলতে পারি প্রায় হতবাক করে দিয়ে, শেষ করেছেন। ... ভাষা ব্যবহারে লেখক অভিনন্দিত হবেন। -ফায়রুজ হক, সাহিত্য সমালোচক।/ মোমিনুল হকের ভাষা সাবলীল, স্বাভাবিকভাবে চলে, এবং আমাদেরকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তাঁর উপমাগুলো চমৎকার। তিনি তাঁর চরিত্রগুলো থেকে দূরত্ব রেখে চলেন, ভাবালু হবার ব্যাপারে তাঁর স্বাভাবিক অনীহা রয়েছে। কিন্তু তাই বলে তিনি যে নিস্পৃহ তা মোটে নন। গল্পের সেই মানুষগুলোর জন্য তাঁর রয়েছে বিশেষ সহানুভূতি, যারা নানাভাবে পীড়িত ও লাঞ্ছিত হচ্ছে; কিন্তু পরিপূর্ণভাবে বাঁচার জন্য যাদের ভেতর বিদ্যমান অদম্য আগ্রহ। -অধ্যাপক ইমেরিটাস সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।/ মানুষ, জীবন, সমাজ, তথা রাষ্ট্রীয় বিশ্লেষণের যথাযথ রূপায়ন মোমিনুল হকের লেখায় পাওয়া যায়। ... কল্পনার আড়ালে যেসব চরিত্র আমাদের সম্মুখে তিনি তুলে ধরেন, তা মাঝে মাঝে কল্পনাকেও ছাড়িয়ে বাস্তবতায় ধরা পড়ে। -মোমিন স্বপন, সাহিত্য সমালোচক, দৈনিক জনকণ্ঠ, ঢাকা।/ Hoque’s work is an intensely pleasing sensation. His stories are reflective of a modern mind of one who has engaged serioulsy in the pursuit of fiction as a form of art. – The Daily Star Book Review.
Momin ul Hoque- জন্মস্থান বারাহিপুর, ফেনী (১৯৩৬)। তিনি স্কুল-শিক্ষা পেয়েছেন ফেনীতে এবং কলেজ-শিক্ষা পেয়েছেন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে। বিজ্ঞানে স্নাতক (১৯৫৫) এবং পেট্রোলিয়াম ভূতত্ত্বে স্নাতকোত্তর (১৯৫৭) ডিগ্রি নিয়েছে যথাক্রমে ঢাকা ও পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় (লাহোর) থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও পিটর্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা-শেষে তিনি ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন (১৯৬৫)। ১৯৫৫ সালে ভাষাযুদ্ধ এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে তিনি বেশ কিছুদিন ঢাকা জেলেও কাটিয়েছেন। তিনি স্টান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির পেট্রোলিয়াম ভূতাত্ত্বিক হিসেবে তৎকালীন পাকিস্তানের দুই অংশে ভূতাত্ত্বিক-জরিপে নেতৃত্ব দিয়েছেন (১৯৫৭-১৯৬১)। তিনি অধ্যাপনা করেছেন ইরাক, লিবিয়া, নাইজেরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রে। আমন্ত্রিত অধ্যাপক হিসেবে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও বক্তৃতা দিয়েছেন। যক্তরাষ্ট্র, যক্তরাজ্য, মস্কো, সিডনি ও টোকিও আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সম্মেলনে তিনি গবেষণা-প্রবন্ধ পড়েছেন এবং বিজ্ঞান জর্নালে গবেষণা-প্রবন্ধ লিখেছেন। তিনি প্রকৌশল-ভূতাত্ত্বিক পেশা থেকে ২০০৭ সালে অবসর নিয়ে ফিরে যান তরুণ বয়সের সাহিত্যিক জীবনে। তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘অšে¦ষণ’ ছাপা হয়েছিল ১৯৫৮ সালে। এর পর তিনি আর সাহিত্যের দুয়ারে পা দেননি। হাল আমলে তিনি লিখেছেন দুটো গল্প-সংকলন, স্বাতি এক নক্ষত্রের নাম (অ্যাডর্ন, ২০০৯) ও ফেরারি (স্বরব্যঞ্জন, ২০১০) এবং দুটো উপন্যাস, ভাটির যেদেশর যাত্রা (অ্যাডর্ন, ২০০৯) ও উৎসের সন্ধানে (স্বরব্যঞ্জন, ২০১০)। মোট তেরোটি গল্প নিয়ে আলেয়ার আলো গল্প-সংকলন। স্বদেশ ও বিদেশের পটভূমিকায় এই গল্পগুলো বিরচিত। এই গ্রন্থের কিছু গল্প বাংলাদেশের, পশ্চিমবঙ্গের ও যুক্তরাষ্ট্রের সাহিত্য সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।