বাঙালির গৌরবময় ইতিহাসের সােনালি অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধ। যুগ যুগ ধরে পরাধীনতার যন্ত্রণা সয়ে সয়ে একটি জাতির সাহসী হয়ে ওঠার রূপকথা স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জীবনবাজি লড়াই। পৌনে দু’শ বছর ব্রিটিশ শাসনের যে দীর্ঘ যাতনাকাল সেই সুদীর্ঘ কালেও চেষ্টা চলেছে স্বদেশ মুক্তির। অসংখ্য বীর আত্মাহুতি দিলেও মুক্তি আসেনি। পৌনে দু’শ বছর শাসনের পর নানা সহিংস রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষ নামের বিস্তৃত ভূখণ্ড ব্রিটিশমুক্ত হয়। কিন্তু সেই স্বাধীনতার স্বাদ বাংলাদেশের মানুষ ভােগ করতে পারেনি । ধর্মান্ধ রাষ্ট্র পাকিস্তান দ্বারা এদেশ নতুন করে নির্যাতিত হতে থাকে তাদের অংশরাষ্ট্র হয়ে। ইতিহাসের প্রকৃত লড়াই শুরু হয় এখান থেকেই। ১৯৫২ সালের ভাষার লড়াই। বাষট্টি, আটষট্টি এবং ঊনসত্তরের আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালির অবিসংবাদিত মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। সেই মহান মুক্তির লড়াইয়ে বিজয়ের মধ্য দিয়ে আমরা অর্জন করি প্রিয় স্বাধীনতা। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের শিল্প। সাহিত্যকে উত্তরােত্তর সমৃদ্ধ করে চলেছে। ফজলে আহমেদ দেশের জনপ্রিয় শিশু কথাসাহিত্যিক। বিশেষ করে আমাদের বর্ণাঢ্য শিশুসাহিত্যের এক প্রদীপ্ত লেখক। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তার সাহিত্যকর্মের বড় অংশ রচিত হয়েছে। মূলত তিনি গদ্যশিল্পী। মুক্তিযুদ্ধের গল্প এবং উপন্যাসে তিনি বাঙালির হাজার বছরের মুক্তির স্বপ্নকে অনিন্দ্য ভাষাভাবনায় ফুটিয়ে তােলেন। ‘ছােটদের একাত্তরের নয়মাস'। বইটি কিশাের পাঠকদের প্রিয়তা অর্জনে নন্দিত হবে।
ফজলে আহমেদের জন্ম ১৯৫৯ সালের ৩ নভেম্বর ময়মনসিংহের। গফরগাঁও উপজেলার নিগুয়ারী ইউনিয়নের মহিশমাতান গ্রামে।। বাল্যকালটা পুরােপুরি গ্রামে কাটিয়েছেন তিনি। গ্রাম্য প্রকৃতির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তাঁর। তাই এখনাে সময় পেলেই গ্রামে ছুটে যান। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১০০। প্রথম প্রকাশিত বই ছছাটদের ১৯৭১। বইটি হােটদের মনে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ব্যাপকভাবে নাড়া দেয়। তাদের কচি কোমল মনে জাগিয়ে তােলে ৭১ এর ভয়াবহতা। শিশুসাহিত্য শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতিরূপে পেয়েছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত শিশুসাহিত্য পুরস্কার, কবি কাদের নওয়াজ শিশুসাহিত্য পুরস্কার।। ফজলে আহমেদ সহজ সরল ভাষায় শিশুদের মতাে করে শিশুদের জন্যই লিখেন। লেখালেখিতে কোনােরকম দলাদলি পছন্দ করেন না। বর্তমানে ঢাকা ওয়াসাতে কর্মরত আছেন। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে তাঁর সুখের সংসার।