ঈশপ ও তাঁর গল্প ঈশপের জন্ম কবে? এ নিয়ে রয়েছে নানান মত। ঐতিহাসিক হেরোডোটাসের মতে খৃষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যভাগে ঈশপের জন্ম। অনেকের মতে খৃষ্টপূর্ব ৬২০ অব্দে। হেরোডোটাস জানিয়েছেন জন্মসূত্রেই ক্রীতদাস ছিলেন ঈশপ। তবে ঈশপের জন্মস্থান নিয়ে রয়েছে নানান মত। তাঁর জন্মস্থানের সঠিক খবর জানা যায়নি। সম্ভাব্য জন্মস্থানের তালিকা কিন্তু বিশালÑলিডিয়ার রাজধানী সার্ডিস, গ্রিসের দ্বীপ সামোস, ব্রেসের প্রাচীন একটি উপনিবেশ মেসেমব্রিয়া কিংবা ফ্রিজিয়ার একটি প্রদেশ। ঈশপের মনিব ছিলেন সামোসের দুজন। প্রথম মনিব জানথাস। পরের মনিব ইয়াদমন। ঈশপের জ্ঞান ও বুদ্ধির পরিচয় পেয়ে ইয়াদমন তাঁকে মুক্ত করে দেন। তা-ও বিনা শর্তে। তখনকার গ্রিসের রাজ্যগুলোতে মুক্ত ক্রীতদাসদের সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে সম্মানের সঙ্গে অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল। এ সুযোগটাকেই কাজে লাগালেন ঈশপ। ঘুরে বেড়াতে লাগলেন নানা দেশ। দেখতে লাগলেন নানান জনজীবন। আর এই ঘুরে বেড়ানো ও দেখার কারণে ক্ষুরধার বুদ্ধিসম্পন্ন ও প্রত্যুৎপন্নমতি ঈশপের অভিজ্ঞতা ঝুলি হয়েছে বেশ ভারি। যে কারণে সমসাময়িক মানুষকে তাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অনেক সমস্যার সরল বিশ্লেষণ ও সহজ সমাধান দিতে পেরেছেন ঈশপ। গল্পের কথা শুনে লিডিয়ার রাজা ক্রীসাস তাঁকে আমন্ত্রণ জানান। আমন্ত্রণের সাড়া দিয়ে লিডিয়ার রাজধানী সার্ডিসে ঈশপের সঙ্গে রাজা ক্রীসাসের সাক্ষাৎ হয়। রাজা ক্রীসাস ছিলেন বিদ্যোৎসাহী। সে কারণে ঈশপকে সার্ডিসে থেকে যাওয়ার অনুরোধ করেন রাজা। ঈশপও রাজার কথা রাখেন। সার্ডিসের বাসিন্দা হন। এরপর ঈশপ তাঁর সূক্ষ বিচার ও বোধের মাধ্যমে অনেক রাষ্ট্রীয় সমস্যার সমাধানে রাজাকে সহায়তা করেন। ঈশপের কোনো কাহিনি তিনি নিজে কিংবা সমসাময়িক কেউ লিপিবদ্ধ করেছিল কি না, জানা যায় না। তখন সহজে মনে রাখার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শিক্ষাগুলিকে ছন্দে বাঁধা হত। লোকশিক্ষার জনপ্রিয় ধারা হচ্ছে পশুপাখিদের নিয়ে বানানো গল্প। এই ধারায় ঈশপ শ্রেষ্ঠ।
হাশিম মিলন। জন্ম : ৩১ জানুয়ারী ১৯৭২, ঝিনাইদহ শিক্ষা: এম এস এস (রাষ্ট্রবিজ্ঞান) এম বি এ (মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা: ১১টি মূলত: ছড়া ও কবিতায় বিচরণ নব্বই দশক থেকে লেখালেখির আঙিনায় দীপ্ত উপস্থিতি।